একসময় তিস্তা নদী দিয়ে আসত বড় বড় নৌকা। পাওয়া যেত নানা রকম মাছ। নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল উলিপুর বাজার। এখন সেই নদী ভরাট করে নির্মাণ করা হচ্ছে মার্কেট,পুকুর ও ঘরবাড়ি। ফলে বর্ষা মৌসুমে দেখা দিচ্ছে জলাবদ্ধতা। প্রশাসনের চোখের সামনে নদী দখলের মতো ঘটনা ঘটলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এ নদীটি দখলমুক্ত করে খননের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে উপজেলাবাসী। আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছে উলিপুর প্রেস ক্লাব ও রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি। আন্দোলনের নেতা আবু সাইদ সরকার জানান, আগামী কর্মসূচি হবে স্তব্ধ উলিপুর। তার পরও প্রশাসনের টনক না নড়লে হরতাল ধর্মঘট ও বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে উলিপুরকে অচল করে দেওয়া হবে।
এদিকে সেতুর উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নদী ভরাট করে মোটরসাইকেলের দুটি গ্যারেজ করেছেন ছলেমান সরকার ও সাইফুল ইসলাম। তারা জানান, জায়গা খালি পড়েছিল, তাই ভরাট করে গ্যারেজ করেছি। রেল-নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সভাপতি আপন আলমগীর ও আন্দোলনের নেতা পরিমল মজুমদার জানান, ১৯৭২-৭৩ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ড বুড়ি তিস্তার স্রোতধারা ঠিক রাখতে চিলমারীর কাঁচকোল ও উলিপুরের থেতরাই অর্জুন এলাকায় কিশোরপুর স্লুইস গেট নির্মাণসহ নদীর পাড়ে মালিকানাধীন জমি অধিগ্রহণ করা হয়। ১৯৮৭-৮৮ সালের বন্যায় কিশোরপুর স্লুইস গেটটি নদীতে বিলীন হলে পাউবো সেখানে স্থায়ী বাঁধ দিয়ে বুড়ি তিস্তার মুখ বন্ধ করে দেয়। এ সুযোগে কিছু সুযোগসন্ধানী মানুষ নদী ভরাট করে স্থাপনা গড়ে তুলেছে।
উলিপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মর্তুজা আল মঈদ জানান, বুড়ি তিস্তার জমি ব্যক্তিমালিকানায় দেখানো হয়েছে। ফলে আমাদের করণীয় কিছু নেই।
ইউএনও মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) এসএ এবং সিএস নকশা অনুযায়ী সীমানা চিহ্নিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সীমানা নির্ধারণ হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুড়িগ্রাম পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, বুড়ি তিস্তার দখলকৃত জমি উদ্ধারে পুলিশের সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। স্লুইস গেট নির্মাণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সুত্র:দৈনিক সমকাল, ২৪ এপ্রিল ২০১৭