মোঃ আতিক মেসবাহ লগ্ন:
উলিপুর উপজেলার একটি প্রাচীন বিদ্যাপিঠের নাম কদমতলা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৪৯ সালে ৩ একর ১৯ শতক জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া এ বিদ্যালয়টি আজও সমহিমায় তার গৌরবউজ্জ্বল ভুমিকা পালন করে চলেছে। বিদ্যালয়টিকে সুনামের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সব থেকে বড় ভূমিকা পালন করেছেন কুড়িগ্রাম জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ স্বর্গীয় অনিল চন্দ্র ভাদোর। তিনি দীর্ঘদিন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
বর্তমানে উক্ত বিদ্যালয়টিরই প্রাক্তন ছাত্র জনাব মোঃ সিরাজুল ইসলাম বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। বিদ্যালয়টির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন অত্র এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি মোঃ নুরুল আনাম মান্না সাহেব। অর্থনৈতিক দিক থেকে স্কুলটিকে বিশেষ ভাবে সাহায্য করছেন উক্ত বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র ড.এম এন হুদা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডিজটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষে স্কুল কর্তৃপক্ষ গোটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে ডিজিটালাইজ করার পরিকল্পনা গ্রহন করেছে। উক্ত উদ্দেশ্যে শিক্ষকগন তাদের নিজস্ব বেতনের টাকা থেকে নির্দিষ্ট অংশ জমা করে ল্যাপটপ কেনা শুরু করেছে। উক্ত টাকা দিয়ে প্রতি তিন মাস পর পর একটি করে ল্যাপটপ কিনে লটারির মাধ্যমে তা শিক্ষকদের মাঝে বিতরন করা হচ্ছে। সরকারি কোন ধরনের অনুদান কিংবা আধুনিক কম্পিউটার ল্যাব এর ব্যাবস্থা না থাকায় শিক্ষকগন নিজের কষ্টে উপার্জিত অর্থ দ্বারাই এ মহৎ উদ্যোগ নিয়েছে। এ পর্যন্ত চার জন শিক্ষক ল্যাপটপ পেয়েছে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে মাননীয় জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয় বিদ্যালয়টি পর্যবেক্ষণ করেন। শিক্ষকদের এই মহৎ উদ্দেশ্য কে তিনি সাধুবাদ জানান। কিন্তু তার কাছ থেকে কোন ধরনের সাহায্য পাওয়া যায়নি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন,”আমাদের বিদ্যালয়টিকে কুড়িগ্রাম জেলার একটি মডেল বিদ্যালয়ে পরিণত করার প্রয়াস নিয়েই আমরা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।” বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র অর্পন কুমার বলে, “মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ক্লাস করায় আমরা অনেক কঠিন পাঠ্যবিষয় সহজেই বুঝতে পাচ্ছি। গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিদ্যালয়টিতে দেয়া হয়েছে একটি মাত্র ল্যাপটপ দিচ্ছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই কদমতলা দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক মহোদয় কর্তৃক গৃহীত এই পদক্ষেপ সকলের প্রশংসার দাবিদার। বাংলাদেশের সকল প্রত্যন্ত অঞলে ছড়িয়ে থাকা বিদ্যালয়ের শিক্ষকগন যদি এধরনের উদ্যোগ গ্রহন করেন তাহলে একদিকে যেমন উন্নত হবে শিক্ষার মান তেমনি গঠন হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ডিজিটাল বাংলাদেশ।