।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
প্রায় দুই বছর আগে মারা যাওয়া একজন অধ্যাপককে রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ পদায়নের কথা জানানো হয়, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ৩৭ জনকে অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ ও বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে বদলি ও পদায়ন করা হয়। তালিকার ১৩ নম্বরে ছিলেন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন, যিনি ২০২৩ সালের ১২ এপ্রিল ৫৩ বছর বয়সে মারা যান।
জামাল উদ্দীনকে রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে, তিনি ইতিমধ্যে মারা গেছেন বলে এ পদায়ন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
জামাল উদ্দীনের স্ত্রী তাহমিনা শবনম বলেন, “২০২৩ সালের মে মাসে সরকারি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মীরা আমার স্বামীর পদায়ন নিয়ে যোগাযোগ করলে আমি জানাই যে তিনি মারা গেছেন। তাঁর পেনশনের টাকাও উত্তোলন করা হয়েছে। এখন হঠাৎ তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হলো কেন?”
তিনি আরও বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে জামাল উদ্দীন আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হামলার শিকার হন, যা পরবর্তীতে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায়।
রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এ.টি.এম শওকত আকবর বলেন, “আমি জানতাম না যে মৃত ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তা দেখতে হবে।”
এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি। তবে, একজন মৃত ব্যক্তির নাম পদায়ন তালিকায় কীভাবে এলো, তা নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছে।
জামাল উদ্দীন কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর এই পদায়ন প্রশাসনিক ত্রুটির ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।