।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
উলিপুর উপজেলায় এবার ভুট্টা চাষে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। কম খরচে ভালো ফলন ও বাজারে চাহিদা থাকায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন এলাকায় ভুট্টার চাষ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে, যা কৃষকদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
উলিপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন নদী দ্বারা বিধ্বস্ত। এসব ইউনিয়নের চরাঞ্চলে নদীর পলি জমে উর্বর জমিতে কৃষকরা রবি ফসলের চাষ করেছেন। এর মধ্যে ভুট্টা চাষও উল্লেখযোগ্য। গত বছর উপজেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৮০ হেক্টর, কিন্তু অর্জিত হয়েছিল ৯৭৩ হেক্টর। এবার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৭৫ হেক্টর, তবে ইতিমধ্যে ১ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ সম্পন্ন হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯৫ হেক্টর বেশি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ভুট্টা চাষে খরচ কম এবং ফলন বেশি হওয়ায় কৃষকরা এতে আকৃষ্ট হচ্ছেন। গত বছরের তুলনায় এবার ১৯৭ হেক্টর বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ও চরাঞ্চলে মাঠজুড়ে ভুট্টার সমারোহ দেখা গেছে। কৃষকরা ভুট্টার ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের জুয়ানসতরা এলাকার কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, এবার তিনি প্রায় ৩ একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত তার খরচ হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ভুট্টা উঠানো পর্যন্ত আরও ৫০ হাজার টাকা খরচ হবে বলে তিনি জানান। তিনি আশা করছেন, এবার ৩০০ থেকে ৪০০ মণ ভুট্টা উৎপাদন হবে। বাজারদর ভালো থাকলে তিনি ১ লাখ টাকারও বেশি লাভের আশা করছেন। তবে তিনি অভিযোগ করেন, বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বেশি হওয়ায় লাভ কম হচ্ছে।
তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের করাল গ্রাসে আবাদি জমি ও বসতবাড়ি হারানো হাজার হাজার পরিবার এবার চরাঞ্চলে ভুট্টা চাষ করে নতুন করে স্বপ্ন দেখছেন। বন্যার পানিতে পলি জমে উর্বর হওয়া চরাঞ্চলের জমিতে ভুট্টা চাষ করে তারা বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা জানান, বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ভুট্টা চাষ তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে। বন্যার পলি জমে চরাঞ্চলের জমি বেশি উর্বর হওয়ায় ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে। কৃষকরা আশা করছেন, এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন তাদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি করবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, কৃষকদের সময়মতো কৃষি উপকরণ ও পরামর্শ দেওয়ায় এবার ভুট্টা চাষ বেড়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাজারদর ভালো থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
//নিউজ/উলিপুর//জাহিদ/মার্চ/১৮/২৫