।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
রৌমারী উপজেলায় এক আসামি পুলিশের হাতে কামড় দিয়ে হাতকড়াসহ পালানোর ঘটনা ঘটেছে। সোমবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর চরেরগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশের অভিযানে আহত উপপরিদর্শক (এসআই) আউয়াল হোসেনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত জানাতে গিয়ে রৌমারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মমিনুল ইসলাম বলেন, “আমি স্বাক্ষ্য দেওয়ার জন্য কর্মস্থলের বাইরে আছি। তবে জেনেছি, পুলিশ সদস্যকে কামড় দিয়ে আহত করা হয়েছে। সে এখন চিকিৎসাধীন রয়েছে।”
পলাতক আসামি শাহনেওয়াজ আবির রাজু (৩০) যাদুরচর ইউনিয়নের কাশিয়াবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা। তার বিরুদ্ধে একটি প্রতিবন্ধী স্কুলশিক্ষার্থীকে ধর্ষণ ও মাদক কারবারের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও, ভুক্তভোগী পরিবারসহ স্থানীয়দের দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগও রয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিবন্ধী স্কুলশিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে রাজুর বিরুদ্ধে। ঘটনার পর গ্রামবাসীর চাপে রাজু পরিবারসহ নিজ এলাকা ছেড়ে ধনারচর চরেরগ্রাম এলাকায় তার খালা ও সাবেক মহিলা ইউপি সদস্য শিরিনা আক্তারের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। ভুক্তভোগী পরিবার পুলিশে অভিযোগ করলে, সোমবার রাতে এসআই আউয়াল হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি পুলিশ দল অভিযানে যায়।
তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ রাজুকে কয়েক পিস ইয়াবা সহ আটক করে হাতকড়া পরায়। এ সময় রাজু ও তার মা আবেদা আক্তার রাজিয়া (৪৮) এবং খালাতো বোন রুনা আক্তার (২৩) পুলিশের ওপর হামলা করে। রাজু এসআই আউয়ালের হাতে কামড় দেয় এবং তার অন্ডকোষে আঘাত করে। এ সুযোগে হাতকড়া পরা অবস্থায় পালিয়ে যায় রাজু।
ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ পৌঁছে এসআই আউয়ালকে উদ্ধার করে। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে রাজুর মা ও খালাতো বোনকে আটক করা হয়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে একটি দেশি রাম দাও উদ্ধার করে পুলিশ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল বাতেন বলেন, “পুলিশের অভিযানের সময় রাজু পুলিশকে আঘাত করে হাতকড়াসহ পালিয়েছে।” রৌমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. নবিউল ইসলাম জানান, আহত পুলিশ সদস্য চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তবে তার অবস্থা স্থিতিশীল।
রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান বলেন, “আসামি রাজু এসআই আউয়ালের হাতে কামড় দিয়ে পালিয়েছে। পরে হাতকড়া উদ্ধার করা গেলেও তাকে এখনো গ্রেফতার করা যায়নি। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। মাদক ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে মামলা প্রক্রিয়াধীন।”