।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
উলিপুর উপজেলায় জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধের জেরে এক বৃদ্ধার উপর এসিড নিক্ষেপের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত ৭০ বছর বয়সী মরিয়ম বেগম বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে ঘটনার দুই দিন পরও পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উলিপুর উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মাদারটারী এলাকায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবুল তালেবের ছেলে মঞ্জু মিয়া (৪৮) এবং তার প্রতিবেশি আজিজার রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলাম রানু’র (৪৮) পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মঞ্জু মিয়ার ছোট ভাই মজনু মিয়া (৩৮) পুকুর থেকে মাছ ধরে ফেরার পথে রানু’র বাড়ির সামনে পৌঁছালে তাকে গালিগালাজ করা হয়। এতে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
সংবাদ পেয়ে মজনু মিয়ার মা মরিয়ম বেগম এবং স্ত্রী শিউলী বেগম (৩৫) ঘটনাস্থলে এগিয়ে এলে রানু’র পরিবারের লোকজন তাদের মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে রানু মরিয়ম বেগমের মুখে ও কপালে প্লাস্টিকের বোতলে থাকা এসিড ঢেলে দেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে মারাত্মকভাবে পুড়ে যান মরিয়ম বেগম।
ঘটনার পর স্থানীয়রা মরিয়ম বেগমসহ আহতদের উদ্ধার করে উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর তার অবস্থা অবনতি হলে তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এদিকে, ঘটনার দিনই রাতে মঞ্জু মিয়া উলিপুর থানায় রফিকুল ইসলাম রানুকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে অভিযোগ দায়েরের দুই দিন পরও পুলিশ মামলা গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছেন মঞ্জু মিয়া। তিনি বলেন, “প্রতিপক্ষ আমার মায়ের মুখে ও মাথায় এসিড ঢেলে দিয়েছেন। কিন্তু থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। আমার মায়ের অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন।”
এ বিষয়ে উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, “এসিড নিক্ষেপের ঘটনাটি সন্দেহজনক। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্যদিকে, অভিযুক্ত রফিকুল ইসলাম রানু মুঠোফোনে দেওয়া সাক্ষাত্কারে বলেন, “মঞ্জু মিয়ার পরিবারের সাথে সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তবে এসিড নিক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটেনি। তদন্ত করলেই সত্য বেরিয়ে আসবে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানান, মরিয়ম বেগমের মুখে ও মাথায় কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থের আঘাত রয়েছে। তার জ্বালাপোড়ার মাত্রা বেশি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
//নিউজ/উলিপুর//জাহিদ/ফেব্রুয়ারি/২৪/২৫