।। উপজেলা প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রামের চিলমারী-রাজিবপুর নৌপথে আবারও নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে চিলমারী উপজেলার কড়াইবরিশাল খেয়াঘাটের কাছে ব্রহ্মপুত্র নদে এই ঘটনা ঘটে। ডাকাতরা দুটি যাত্রীবাহী নৌকায় হামলা চালিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও তাদের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের মধ্যে।
চিলমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাহেদ খান ও চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম ডাকাতির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
রবিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজিবপুরের কোদালকাটি ও পাখিউড়া থেকে চিলমারীর উদ্দেশে রওনা হওয়া দুটি যাত্রীবাহী নৌকা কড়াইবরিশাল খেয়াঘাটে যাত্রী উঠানোর জন্য ভিড়ে। এ সময় ১০ থেকে ১৫ জনের heavily armed ডাকাত দল নৌকাগুলোতে হামলা চালায়। তারা গুলি ছুড়ে যাত্রী ও গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা লুট করে পালিয়ে যায়।
নৌকার মাঝি মোসলেম উদ্দিন জানান, ‘‘ডাকাতরা আমার নৌকায় উঠে তিন যাত্রীর কাছ থেকে ৫৭ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও টাকা লুট করে। তারা গুলি ছুড়েছে এবং হাতে বেয়নেটও ছিল। পাশে পুলিশের নৌকা থাকলেও তারা কোনো সাহায্য করেনি।’’
ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি নৌকা থাকলেও তারা ডাকাতদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। ভুক্তভোগী গরু ব্যবসায়ী আজম মিয়া বলেন, ‘‘আমরা ডাকাতদের ধাওয়া করেছিলাম। পুলিশ যদি একটু সাহায্য করত, তাহলে ডাকাতদের আটকানো যেত। তারা শুধু ফাঁকা গুলি ছুড়েছে, কিন্তু এগিয়ে আসেনি।’’
একের পর এক ডাকাতির ঘটনায় চিলমারী-রাজিবপুর নৌপথে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই এই পথে যাত্রা করতে ভয় পাচ্ছেন। স্থানীয়রা দাবি করছেন, নৌপথে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হোক এবং ডাকাতদের দ্রুত গ্রেফতারের ব্যবস্থা করা হোক।
এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে নৌপথে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। স্থানীয়রা চাইছেন, দ্রুত ডাকাতদের গ্রেফতার করে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক।
চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘‘ডাকাত দলকে আটকানোর চেষ্টা করা হলেও তারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।’’ এটি প্রথমবার নয়, গত ২৯ জানুয়ারি একই এলাকায় নৌ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এর আগে গত বছরের ২১ ডিসেম্বর চিলমারীর অষ্টমীরচর ইউনিয়নের দুইশ’ বিঘার চরে ১৬-১৭ জনের ডাকাত দল যাত্রীদের জিম্মি করে টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে যায়।
চিলমারী থানার ওসি মোশাহেদ খান বলেন, ‘‘আমি বিস্তারিত জেনে তারপর বলতে পারব।’’ এদিকে, চিলমারী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) সেলিম সরকারের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/ফেব্রুয়ারি/০৯/২৫