।। নিউজ ডেস্ক ।।
চিলমারীতে রোববার প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশ। চিলমারীর জোড়গাছ সফিউল আলম রাজা স্টেডিয়ামে আয়োজিত এই সমাবেশে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কয়েক হাজার কৃষকের যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। আয়োজক কমিটি কৃষকদের অধিকার ও দাবিগুলো আদায়ে ১২ দফা দাবি উত্থাপন করেছে।
এই মহাসমাবেশকে সফল করতে আয়োজকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। শনিবার কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে সমাবেশের প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা তুলে ধরেন ‘উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশ বাস্তবায়ন গণকমিটি’র আহ্বায়ক নাহিদ হাসান নলজে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভূমিহীন আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন, মামুনুর রশিদ, জুয়েল এবং আজাদ আলী।
নাহিদ হাসান নলজে জানান, কৃষকদের অধিকার আদায়ে ১২ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে—হাট ও ঘাটে ইজারা প্রথা বাতিল, কৃষি পণ্যের সুষ্ঠু দাম নির্ধারণ, কৃষি পরিবহনে পৃথক বগি সংযোজন, নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রকৃত ভূমিহীনদের মধ্যে খাস জমি বণ্টন, বন ও নদী দখল বন্ধ এবং মহাজনী প্রথা বিলোপ।
তিনি আরও জানান, সরকারের দুই উপদেষ্টা সমাবেশে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও জরুরি মন্ত্রিসভা বৈঠকের কারণে তারা আসতে পারছেন না। এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন তারা। তবে এই সমাবেশ সফল করতে এবং ভবিষ্যতে আরও তিনটি আঞ্চলিক সমাবেশের মাধ্যমে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কৃষক সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
উত্তরবঙ্গ কৃষক মহাসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম। আরও থাকবেন লেখক-কবি, বুদ্ধিজীবী, জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট কৃষক নেতা দেলোয়ার জাহান।
সমাবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও রয়েছে। উলিপুর ভাওয়াইয়া একাডেমি এবং গাইবান্ধার সাঁওতাল শিল্পীরা পরিবেশনা করবেন। এছাড়া ঢাকার অভিনেত্রী নওশাবা আহমেদ এবং অভিনেতা দীপক সুমনের ‘তীরন্দাজ নাট্য দল’ তাদের বিশেষ পরিবেশনা নিয়ে অংশ নেবেন।
১২ দফা দাবির সংক্ষিপ্তসার ১. হাট ও ঘাট থেকে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ এবং সরাসরি খাজনা তোলার ব্যবস্থা। ২. কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণে কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা। ৩. চরাঞ্চলে প্রকৃত ভূমিহীনদের খাস জমি বণ্টন। ৪. ইলিশসহ সকল প্রজাতির মাছের ডিম ছাড়ার মৌসুমে মাছ ধরা নিষিদ্ধ। ৫. আন্তঃনগর ট্রেনে কৃষিপণ্য পরিবহনে বিশেষ বগি সংযোজন। ৬. কৃষিঋণ মওকুফ এবং অনাদায়ী ঋণে মামলা বাতিল। ৭. আখ ও বীট চিনি উৎপাদনে কৃষকদের স্বাধীনতা নিশ্চিত। ৮. মহাজনী প্রথার বিলোপ এবং কৃষকদের জন্য সাশ্রয়ী লোনের ব্যবস্থা। ৯. নদীভাঙন রোধে বাঁধ নির্মাণ এবং চরাঞ্চলে বনাঞ্চল তৈরি।