।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
রাজারহাট উপজেলার গর্ব, নিভৃতচারী লেখক হায়দার বসুনিয়া আর আমাদের মাঝে নেই। শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বার্ধক্যজনিত কারণে নিজ গ্রামের বাড়ি নাজিমখান ইউনিয়নের মনারকুঠিতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
তাঁর প্রয়াণে পরিবার, আত্মীয়স্বজন, এবং ভক্ত-অনুরাগীদের মাঝে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তিনি স্ত্রী, পাঁচ ছেলে, এক মেয়ে এবং নাতি-নাতনিসহ রেখে গেছেন এক বিশাল সাহিত্যিক উত্তরাধিকার।
হায়দার বসুনিয়া কুড়িগ্রামের এক অবহেলিত অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেও সাহিত্যচর্চার মাধ্যমে দেশজুড়ে খ্যাতি অর্জন করেন। জীবনের বাস্তবতা, সমাজের গল্প, মুক্তিযুদ্ধের বেদনা, ভালোবাসা এবং মানবিকতার কাহিনি তাঁর লেখায় উঠে এসেছে বারবার।
তিনি ৫০টিরও বেশি উপন্যাস লিখেছেন, যার অর্ধেক ইতোমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে এবং পাঠকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছে। উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে নেপথ্যে লীলাময়, মেথর সমাচার, রাজাকারের মের্জাই বদল, তিস্তা নদীর পাড়ে, ভাগ্যান্বেষী ভবঘুরে, চলো যাই তেপান্তরের মাঠে। কবিতা ও গল্পের দিকেও ছিল তাঁর সমান দক্ষতা। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য জেগে আছি, অমোঘ সায়াহ্ন, হংস সংলাপ, রঙিন চশমা এছাড়াও, ধর্মীয় প্রবন্ধে তাঁর বইগুলো যেমন সিরাজম মুনিরা ও তাঁর উন্মতগণ পাঠকদের কাছে ভীষণ প্রশংসিত হয়েছে।
হায়দার বসুনিয়া ছিলেন সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় সমান পারদর্শী। গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা—সর্বত্রই তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল নিবিড় ও মানবিক। তাঁর রচনাগুলো আমাদের জীবনের বাস্তবতা ও সমাজের প্রতিচ্ছবি হয়ে থাকবে।