।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
মাঘ মাসের কনকনে ঠান্ডা, ঘন কুয়াশা আর উত্তরের শীতল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজারহাট উপজেলার জনজীবন। সারা দিন সূর্যের দেখা নেই, চারপাশে কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে এলাকা।
পশ্চিম দেবোত্তর গ্রামের বৃদ্ধ অতুল চন্দ্র (৭৫) জানান, “আজকে খুব ঠান্ডা। মাঘের জারে বাঘ কান্দে, খরকুটার আগুন জ্বালিয়ে তাপ নিচ্ছি।” গ্রামেরই অনিতা রানী (৫৫) বলেন, “ঠান্ডায় হাত-পা বরফ হয়ে গেছে। সূর্যের দেখা নেই।” আরেক বৃদ্ধা বোলো রানী (৬৫) বলেন, “এ ঠান্ডায় জীবন চালানো কষ্ট হয়ে গেছে। কেউ যদি একটা কম্বল দিতো!”
নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য এই শীত যেন বাড়তি বিপদ। দিনমজুর সুধা রানী জানান, “এমন ঠান্ডায় সকালে অন্যের বাড়িতে কাজ করতে যাচ্ছি। কাজ না করলে খাব কী?” কৃষি শ্রমিক বনিজ মিয়া বলেন, “জমিতে চারা রোপণ শুরু করেছি। কিন্তু ঠান্ডার কারণে কাদা পানিতে পা রাখা যাচ্ছে না।”
অটোরিকশা চালক তাইজুল ইসলাম ও মোজাম্মেল হোসেন জানান, “সকালে হেডলাইট জ্বালিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে। কিন্তু রোজগারের জন্য বের হতেই হয়।”
ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউনিয়নের শ্রমিক শাহাজাহান আলী (৫৫) বলেন, “কনকনে ঠান্ডায় কাজ করতে গিয়ে শরীর হিম হয়ে যায়, কিন্তু পেটের দায়ে থামা যায় না।”
রাজারহাট উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান জানান, এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার চার শ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, আজ (২৩ জানুয়ারি) জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি আরও বলেন, তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।