।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামের উলিপুরে মাঘ মাসের শুরুতেই শীতের তীব্রতা বেড়ে গেছে। কনকনে হিমেল হাওয়ার সঙ্গে ঘন কুয়াশায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলসহ উপজেলার সর্বত্রই শীতের প্রকোপে ভুগছেন মানুষ। সকাল থেকে সূর্যের দেখা না মেলা এবং কুয়াশার ঘনত্ব বাড়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ছিন্নমূল মানুষদের।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকাল থেকে শীতের তীব্রতা আরও বেড়েছে। যানবাহনগুলো দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে। শীত, কুয়াশা ও হিমেল হাওয়া যেন প্রতিযোগিতায় নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষগুলো দিন পার করছেন শত কষ্টে। কেউ খড়-কাঠে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্টা করছেন।
উপজেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে উপজেলায় ৭ হাজার ৫০০টি কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৫ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে, আর অবশিষ্ট কম্বল বিতরণ কার্যক্রম চলছে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় বরাদ্দ খুবই কম বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খন্দকার মো. ফিজানুর রহমান বলেন, “যতটুকু কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে, তা যথাসম্ভব বিতরণ করা হচ্ছে। তবে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম হওয়ায় অনেকেই শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্ট পাচ্ছেন।”
উপজেলার গুনাইগাছ এলাকার দিনমজুর আব্দুল হামিদ, শাহালম, নরেন চন্দ্রসহ অনেকে বলেন, “প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে ঘর থেকে বের হওয়া কষ্টকর। কিন্তু পেটের দায়ে কাজের সন্ধানে বের হতেই হচ্ছে।”
অন্যদিকে, শিক্ষার্থীরাও শীতের কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন। আল বশির, আশরাফুল, রিয়াজ, আলামিন ও রিফাত নামে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, “সকালে প্রাইভেট পড়তে এবং কলেজে যেতে সাইকেলে করে প্রায় ৮ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হয়। ঠান্ডা এত বেশি যে নাক দিয়ে পানি পড়ে, হাত-পা বরফের মতো হয়ে যায়। তবুও যেতে বাধ্য হচ্ছি।”
কুড়িগ্রাম রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, বুধবার সকালে উলিপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগামী ২৪ ঘণ্টায় বৈরী আবহাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে দুপুরেও সূর্যের দেখা নাও মিলতে পারে।
//নিউজ/উলিপুর//জাহিদ/জানুয়ারি/২২/২৫