।। নিউজ ডেস্ক ।।
অতীশ দীপঙ্কর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ১০:৩০ মিনিটে “ICT Policy and Reform: In the view and Realization of New Bangladesh” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। নতুন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংস্কার ও নীতি নির্ধারণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালনের লক্ষ্যে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
সেমিনারের কী-নোট উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের আইসিটি উদ্যোক্তা ও গবেষক জনাব রূপম রাজ্জাক। তিনি তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে নীতি সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা ও প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তার প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি, টেকসই পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ, ই-গভর্নেন্স, পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ, এবং সাইবার সিকিউরিটির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “বর্তমানে সাধারণ নাগরিকদের পাসপোর্ট বা ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে যে ভোগান্তি পোহাতে হয়, তা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এমন বাংলাদেশ চাইনি। আইসিটির কাজ হবে দালাল সৃষ্টি নয়, বরং মানুষের জীবনে সহজতা আনা।”
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কিল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের পরিচালক ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন। তিনি বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে বিপুল জনগোষ্ঠিকে মানবসম্পদে রূপান্তর করার জন্য যথাযথ নীতি প্রণয়ন জরুরি।”
সরকারের আইসিটি পলিসি এডভাইজর ফাইজ আহমেদ তায়েব সাইবার সিকিউরিটি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা বিষয়ে সরকারের কার্যক্রম তুলে ধরেন এবং সংশোধনের জন্য সুপারিশ প্রার্থনা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য-সচিব জনাব মো. কামরুজ্জামান লিটু বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশের সুযোগ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জনগণের বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছে। এ ধরনের ঘটনা বন্ধে তরুণ প্রজন্মকে প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করতে হবে।”
অন্যান্য বক্তাগণ কল সেন্টারগুলোর মালিকানা বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের কাছে দেওয়া এবং সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের নিবর্তনমূলক ধারা সংশোধনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। পাশাপাশি, জনগণের ব্যক্তিগত ডাটার সুরক্ষার প্রয়োজনীয়তাও তুলে ধরা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম সেমিনারের সার্বিক সাফল্য কামনা করে বলেন, “উন্নয়ন প্রকল্পের সাথে চ্যালেঞ্জ থাকে, এবং এগুলো আমাদের সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে। গ্রিন আইটি এবং একাডেমিয়া-ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্ক উন্নয়নের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।”
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন সিএসই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান জনাব শারমিন আকতার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক, ব্যাংকিং সেক্টরের কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীরা সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।
সেমিনারটির মূল লক্ষ্য ছিল নতুন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সংস্কার ও নীতিনির্ধারণে একটি সমন্বিত রোডম্যাপ প্রণয়ন করা। উপস্থিত সবাই নতুন উদ্যোগ ও সংস্কারের ব্যাপারে তাদের মতামত প্রদান করেন এবং কার্যকর নীতিমালা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।