।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ খেলাধুলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের ডাক্তারপাড়া গ্রামে দিনব্যাপী এ গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশুদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই খেলাগুলো দেখতে আশপাশের গ্রামের কৌতূহলী মানুষ ভিড় জমায়। তাদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় অনুষ্ঠানটি পরিণত হয় এক আনন্দঘন উৎসবে।
দুর্বার তারুণ্য বাংলাদেশ ও শহীদ ডা. ছফর উদ্দীন স্মৃতি সংঘের আয়োজনে হওয়া এই অনুষ্ঠানে গ্রামীণ ঐতিহ্যের নানা খেলা স্থান পায়। ছিল চোখ বেঁধে হাঁস ধরা, তৈলাক্ত কলা গাছে ওঠা, পানিতে বালিশ যুদ্ধ, হাড়িভাঙ্গা, সাঁতার, বিস্কুট দৌড় ও যেমন খুশি তেমন সাজো। খেলাগুলোতে অংশ নেয় বিভিন্ন বয়সী মানুষ।
এক দর্শক মো. রোকনুজ্জামান বলেন, “এ ধরনের খেলা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আজ প্রায় ১০-১৫ বছর পর এ খেলা দেখে মনে হলো, গ্রামের পুরনো ঐতিহ্য আবার ফিরে এসেছে।”
অন্যদিকে, শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম জানান, “টিভিতে এসব খেলা মাঝে মধ্যে দেখি। সচক্ষে দেখে খুব আনন্দ লাগছে। নতুন প্রজন্মের জন্য এ ধরনের আয়োজন খুব প্রয়োজন।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বেলগাছা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ মো. মাহবুবুর রহমান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান খন্দকার, প্যানেল চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম, মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের প্রতিনিধি এম.এ সাঈদ মিয়া, বিএনপি নেতা খলিলুর রহমান এবং আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে.এম রেজওয়ানুল হক নুরনবী।
দুর্বার তারুণ্য বাংলাদেশের সভাপতি রেজওয়ানুল হক নুরনবী জানান, “কালের বিবর্তনে গ্রামীণ খেলাধুলা হারিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক প্রযুক্তির যুগে এসব খেলায় মানুষের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। তাই নতুন প্রজন্মকে এ ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচিত করাতে আমাদের এ উদ্যোগ।”
অনুষ্ঠান শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা এবং খেলায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। আয়োজকরা জানান, গত তিন বছর ধরে তারা এই ধরনের আয়োজন করে আসছেন এবং ভবিষ্যতেও এটি চালিয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন।
এই আয়োজন প্রমাণ করে, প্রযুক্তির যুগেও মানুষের মনে গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী খেলার প্রতি আলাদা ভালোবাসা রয়েছে। সমাজ সচেতন মহল ও সরকারের উদ্যোগে এই খেলাগুলো সংরক্ষিত হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এগুলোর আনন্দ আরও উপভোগ করতে পারবে।