।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
সড়ক উন্নয়নের নামে স্থানীয় জমির মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ফসলি জমিতে গর্ত ও উপরি ভাগের টপ সয়েল কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে চিলমারীর এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জমির মালিকদের দাবি, তাদের সম্মতি ছাড়া জমি থেকে মাটি কেটে নেয়ার ফলে ফসলি জমির উর্বরতা কমে যাচ্ছে এবং তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, সড়কের শোল্ডারের জন্য মাটি ভরাটের বরাদ্দ থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোনো ক্ষতিপূরণের আশ্বাস না দিয়ে জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে। এছাড়াও, যেসব জায়গায় গর্ত করা হয়েছে, সেগুলো বৃষ্টি বা গাড়ি চলাচলের কারণে সড়কের শোল্ডারের মাটি ধসে পড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় রাজারভিটার নুর ইসলাম জানান, তিনি বাড়ি নির্মাণের জন্য মাটি জমা করেছিলেন, কিন্তু সেই মাটিও ঠিকাদারের লোকজন জোর করে কেটে নিয়ে গেছে। কামরুজ্জামান নামে আরেক কৃষক জানান, ভয়ভীতি দেখিয়ে তার জমিতে বড় বড় গর্ত করে মাটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মতো আরও অনেক জমির মালিক একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, “সরকার তো বরাদ্দ দিয়েছে, তবে আমাদের ক্ষতিপূরণ না দিয়েই কেন এমনভাবে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে?”
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফসলি জমির টপ সয়েল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটিই জমির সবচেয়ে উর্বর অংশ। জমির উপরের ৮ থেকে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত মাটিতে মূল জৈবশক্তি থাকে, যা ফসল উৎপাদনে সহায়তা করে। চিলমারীর অতিরিক্ত কৃষি অফিসার মো. নূর আলম বলেন, “টপ সয়েল কেটে নিলে জমির উর্বরতা অনেকটাই কমে যায়।”
জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ‘গ্রামীণ সড়ক’ মেরামত ও সংরক্ষণের আওতায় চিলমারীর থানাহাট জিসি থেকে রাজারভিটা সড়কের পুনর্বাসনের কাজ শুরু করেছে। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ১৩৪ টাকা। কাজ করছে উলিপুরের নিবেদিতা ট্রেডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
উপজেলা প্রকৌশলী ফিরোজুর রহমান জানান, “রাস্তার শোল্ডারের জন্য মাটি ভরাটের বরাদ্দ রয়েছে এবং সড়কের ১০ মিটারের মধ্যে থেকে মাটি সংগ্রহের কথা বলা হয়েছে। তবে কেরিংয়ের জন্য আলাদা বরাদ্দ নেই।”
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। সরেজমিনে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/ডিসেম্বর/১৯/২৪