।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
চারদিকে শীতের আমেজ। বিকেল হতে না হতেই সন্ধ্যা নেমে আসে। শহরের মোড়ে মোড়ে বসে পিঠার দোকান। ধোঁয়া ওঠা ভাপা কিংবা চিতই পিঠা খেতে খেতে সন্ধ্যা জমে ওঠে। বছরের এই শেষ সময়ে বেড়াতে যাওয়া কিংবা শিশিরভেজা ঘাসের সৌন্দর্য উপভোগ করা অনেকের কাছে প্রিয়। তবে শীতের এই মুগ্ধতায় অনেকেই নিজেদের প্রতি যত্ন নিতে ভুলে যান, বিশেষ করে পানি পান করার ক্ষেত্রে।
শীতে কেন কমে পানি পান?
শীতে তৃষ্ণা কম অনুভূত হয়, তাই আমরা পানি পান করার কথা ভুলে যাই। গরমকালের তুলনায় শীতের সময়ে পানি পানের পরিমাণ প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। কিন্তু পর্যাপ্ত পানি না পান করলে শরীরে ডিহাইড্রেশনসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কেন প্রয়োজন পর্যাপ্ত পানি?
আমাদের শরীরের বেশিরভাগ অংশই পানি দ্বারা গঠিত। শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে পানি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পানি ওজন নিয়ন্ত্রণ, রক্ত ও লালা তৈরি, দূষিত পদার্থ বের করা এবং ত্বকের সৌন্দর্য বজায় রাখে। বিশেষজ্ঞদের মতে, শরীরের বিপাকক্রিয়া বা মেটাবলিজমে পানি প্রয়োজন হয়। পর্যাপ্ত পানি পান না করলে এই প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়, যার ফলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।
শীতে পানি কম খেলে যেসব সমস্যা হতে পারে-
➤ ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (UTI): পানি কম পান করলে প্রথমেই দেখা দিতে পারে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন। তাই শীত হোক বা গরম, নিয়মিত পানি পান করতে হবে।
➤ দুর্বলতা: পানি শরীরকে সতেজ রাখে। কিন্তু পানি কম পান করলে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়বে এবং দুর্বলতা দেখা দেবে।
➤ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস: পানি কম পান করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। ফলে সহজেই রোগ-জীবাণুর আক্রমণ হতে পারে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ে।
➤ কোষ্ঠকাঠিন্য: শীতে পানি কম পান করলে হজমের সমস্যা তৈরি হয়। শুষ্ক মলের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে, যা থেকে পাইলসের মতো সমস্যাও শুরু হতে পারে।
➤ ত্বকের ক্ষতি: শীতের শুষ্ক আবহাওয়ায় পানি কম পান করলে ত্বক আরও মলিন ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। পানি কম পান করলে শরীরের দূষিত পদার্থ বের হতে পারে না, যার প্রভাব ত্বকেও পড়ে।
শীতে পানিশূন্যতার লক্ষণ
শরীরে পানির ঘাটতি হলে পিপাসা লাগে, কিন্তু শীতে তাপমাত্রা কম থাকায় তা সহজে বোঝা যায় না। শরীর দ্রুত শুষ্ক হয়ে পড়ে, যেমন ত্বকের শুষ্কতা দেখা দেয়।
শীতের দিনে তৃষ্ণা না পেলেও নিয়ম করে পানি পান করা জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ২-৩ লিটার পানি পান করুন। খুব ঠান্ডা লাগলে মাঝে মাঝে হালকা উষ্ণ পানি খেতে পারেন, যা ভেতর থেকেও আরাম দেবে।