।। নিউজ ডেস্ক ।।
নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের মৃত আমিনুল ইসলামের স্ত্রী লাভলী বেগমের জীবনে পাঁচ বছর আগে স্বামীর মৃত্যু নিয়ে আসে চরম দুর্দশা। স্বামী ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। স্বামী হারিয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হন তিনি।
অভাবের সংসারে সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ মেটাতে নির্ঘুম রাত কাটতো লাভলীর। কিন্তু তার জীবনে আশার আলো হয়ে আসে প্লান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের সহযোগিতায় মহিদেব যুব সমাজ কল্যাণ সমিতির চাইল্ড নট ব্রাইড প্রকল্প। প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত ১৭ হাজার টাকা এবং গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগী পালনসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ তাকে এনে দেয় নতুন করে জীবন সংগ্রাম শুরু করার শক্তি।
লাভলী বেগম জানান, প্রশিক্ষণের পর কেনা ছাগল ও হাঁস-মুরগী পালন করে তিনি ধীরে ধীরে সংসারের খরচ মেটানোর সক্ষমতা অর্জন করেছেন। হাঁস-মুরগীর ডিম বিক্রি ও মাঝে মাঝে ছাগল বিক্রির মাধ্যমে সন্তানদের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এখন তার সংসারে ফিরে এসেছে সচ্ছলতা।
একই ইউনিয়নের দোয়ালীপাড়া গ্রামের দিনমজুর জাহের আলীর স্ত্রী মোহছেনা বেগমের জীবনও বদলে দিয়েছে মহিদেবের সিএনবি প্রকল্প। তিন সন্তানের লেখাপড়ার খরচ মেটাতে যখন হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন বড় মেয়ে জেসমিন নাহার জান্নাতির বিয়ে দেয়ার প্রস্তুতি নেন তারা। কিন্তু জান্নাতি বিয়ে না করে লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চায়।
প্রকল্পের সহায়তায় মা-মেয়ে একসঙ্গে প্রশিক্ষণ নেন। জান্নাতি এখন বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করছে, পাশাপাশি টিউশনি করে নিজের ও ছোট দুই ভাই-বোনের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছে। অন্যদিকে মোহছেনা বেগম প্রকল্প থেকে প্রাপ্ত ১৭ হাজার টাকা দিয়ে ছাগল, হাঁস-মুরগী পালন, সবজি চাষ ও বৃক্ষরোপণ শুরু করেন। তাদের পরিবারে এখন সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
মহিদেব যুব সমাজকল্যাণ সমিতির ইয়ুথলিড টেকনিক্যাল অফিসার ইলিয়াস আলী বলেন, “প্রান্তিক নারী ও কিশোরীদের স্বাবলম্বী করতে আমরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকি। নারীরা এগিয়ে গেলে দেশও এগিয়ে যাবে।” এই প্রকল্পের মাধ্যমে লাভলী ও মোহছেনার মতো নারীরা শুধু নিজেদের জীবনেই পরিবর্তন আনেননি, বরং তারা সমাজের অন্য নারীদের জন্যও অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন।