।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
উলিপুর উপজেলায় মরিচের বাম্পার ফলন ও বাজারে উচ্চমূল্য পাওয়ায় চাষিরা আনন্দিত। বর্তমানে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা চাষিদের জন্য লাভজনক। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এ বছর মরিচের ফলন বেশ ভালো হয়েছে। চাষিরা স্থানীয় পাইকারদের কাছে ক্ষেতেই মরিচ বিক্রি করতে পেরে স্বস্তি পাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ১১০ হেক্টর জমিতে মরিচ চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এর মধ্যে ৯০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ সম্পন্ন হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭৫ মেট্রিক টন। চর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের জন্য ২০টি প্রদর্শনী স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে বিনামূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়।
বজরা, গুনাইগাছ, থেতরাই ও দলদলিয়া ইউনিয়নের তিস্তা নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে মরিচের বাম্পার ফলন হয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, চাষিরা ক্ষেতের পরিচর্যা, মরিচ তোলা ও বাজারে নিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। অনেকে নিজের জমি না থাকলেও লিজ নিয়ে মরিচসহ অন্যান্য সবজির চাষ করছেন।
উপজেলার তিস্তার চরাঞ্চলে মরিচ চাষি রুহুল আমীন জানান, এবারে বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ১৮ শতক জমিতে মরিচের চাষ করেছেন। মরিচের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এপর্যন্ত খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা আরও খরচ হবে প্রায় ১০ হাজার টাকা। মোট খরচ হবে প্রায় ২২ হাজার টাকা। জমিতে মরিচের আশা করছেন প্রায় ৪০ মণ। আয়ের আশা করছেন প্রায় ১ লক্ষ টাকা থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। বিভিন্ন এলাকার মরিচ চাষি বাবলু মিয়া, চাঁদ মিয়া, হাফিজুর রহমান ও মতিয়ার রহমান সহ আরও অনেকে বলেন, এবারে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় মরিচের ফলন অনেক ভালো হয়েছে। বাজার দর ভালো থাকায় আমরা অনেক খুশি। এছাড়া মরিচ চাষের প্রতি অনেক আগ্রহ বেড়েছে এলাকার কৃষকদের।
পৌরসভার সবজি বাজারের পাইকার মুকুল মিয়া, আলম মিয়া ও আনারুল মিয়া বলেন, কাঁচা মরিচের দাম পূর্বের তুলনায় কমেছে। তবে স্থানীয় বাজারে মরিচের সরবরাহ ভালো থাকায় ক্রেতারা সহজে কিনতে পারছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন জানান, মরিচের বাজার দর এবং আবহাওয়ার অনুকূল অবস্থা চাষিদের মধ্যে আগ্রহ বাড়িয়েছে। চাষিরা বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে খুশি। কৃষি অফিস থেকে চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হচ্ছে।
মরিচের উৎপাদন ও বাজারের এই সাফল্য স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
//নিউজ/উলিপুর//জাহিদ/ডিসেম্বর/০৫/২৪