।। নিউজ ডেস্ক ।।
দেশে জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন ৪৯ জন বিশিষ্ট নাগরিক। শনিবার (৩০ নভেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই বিবৃতি তার ফেসবুকে শেয়ার করেন। বিবৃতিতে বাংলাদেশের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠস্বরের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৫ আগস্ট এক ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতন ঘটে এবং শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করলে বাংলাদেশ নতুন এক অধ্যায়ে প্রবেশ করে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যাপক জনগণের সমর্থন অর্জন করে। এতে বলা হয়, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনগণের আস্থা পুনঃস্থাপন, অর্থনীতির পুনর্গঠন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন এখন জাতির জন্য অত্যন্ত জরুরি।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত সরকারের সমর্থকরা বিদেশি সহযোগিতায় মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে এবং সহিংসতা উসকে দিয়ে সমাজে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের অতিরঞ্জিত ও মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এই অপপ্রচারের প্রেক্ষাপটে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে পাবলিক প্রসিকিউটর সাইফুল ইসলাম নৃশংসভাবে খুন হন।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে এবং নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের দ্রুত শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানানো হচ্ছে। এ ঘটনার ফলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও জনগণ সংযম ও ধৈর্য প্রদর্শন করেছে এবং সহিংসতা প্রতিরোধে দৃঢ় ভূমিকা রেখেছে। খুনিরা কোনো সম্প্রদায় বা ধর্মের প্রতিনিধি নয় বরং তারা শেখ হাসিনা ও তার সমর্থকদের এজেন্ট হতে পারে।
বিবৃতিতে আরও যোগ করা হয়, তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত করা গেলে দেখা যাবে, ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় ঐক্য ও দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। বর্তমানে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল। তিনি ভারতে অবস্থান করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছেন এবং তার অনুসারীরা বিদেশে পাচার করা অবৈধ অর্থ ভোগ করছেন। এই প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রপন্থী শক্তিকে ধৈর্য ও সংযমের মাধ্যমে জাতীয় পুনর্গঠনে এগিয়ে আসতে হবে।
বিবৃতিতে সতর্ক করে দেওয়া হয়, কোনো উসকানিমূলক কার্যক্রম দেশের অস্থিরতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এবং পতিত শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থরক্ষা করতে পারে। দেশের অর্থনৈতিক সংকট এখনও কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় রাজনৈতিক বা সাম্প্রদায়িক সহিংসতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলবে। তাই সব ধর্ম, দল, মতাদর্শ, লিঙ্গ, বয়স নির্বিশেষে দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন– বাংলাদেশ রিসার্চ অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ইনফরমেশন নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক রুমি আহমেদ খান, বিজ্ঞানী ডা. শামারুহ মির্জা, লেখক ও সমাজকর্মী ডা. শফিকুর রহমান, আইনজীবী এহতেশামুল হক, অর্থনীতিবিদ ও লেখক জ্যোতি রহমান, বিজ্ঞানী ও অ্যাক্টিভিস্ট ড. ফাহাম আবদুস, প্রকৌশলী নুসরাত খান মজলিশ, ডা. নুসরাত হোমাইরা, ড. সৈয়দ রউফ, নাজিয়া আহমেদ, মেজর (অব.) শাফায়াত আহমদ, ড. আহমদ হাবিবুর রহমান, সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, ডা. মুবাশ্বার হাসান, ইফাত তাবাসসুম, ড. সাইফুল খন্দকার, রূপম রাজ্জাক, ড. মোহাম্মদ মিয়া, জেড চৌধুরী, আসাদ উল ইসলাম, এম রাশেদ, আবু সাঈদ আহমেদ, মুনতাসীর মামুন, আশরাফুল হাসান, জন ড্যানিলোভিজ, কাজী আহমেদ, তৌকির আজিজ, এহতেশাম হক, মুর্শিদ শালিন, আসিফ খান, মারিয়া তাহসিন, সাইফ শাহ মোহাম্মদ, মাহমুদুল খান আপেল, ফয়সাল মাহমুদ, ডা. ক্যাপ্টেন (অব.) খান সোবায়েল বিন রফিক, মো. সুবাইল বিন আলম, ইমতিয়াজ মির্জা, জায়েদ উল্লাস, আসিফ ইকবাল, ডা. সাইমুম পারভেজ, শাহাদ মুন্না, জিয়া হাসান, ফাহিম মাশরুর, সাইনুল হোসেন, জিয়া হাসান সিদ্দিকী, ডা. রুশাদ ফরিদী, ইসলামুল হক, ওয়াসিম আলিম, রুবাইয়াথ সারওয়ার।