।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
উলিপুরের মৌজা মধুপুর এলাকায় এক স্কুলছাত্রী বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে পাঁচ দিন ধরে অবস্থান করছেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর, গ্রাম্য সালিশে ছেলে-মেয়ের পরিবারের মধ্যে বিয়ের আলোচনা চূড়ান্ত হলেও তা ভেঙে যাওয়ার পর ওই ছাত্রী ছেলের বাড়িতে গিয়ে অবস্থান নেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মধুপুর এলাকার সেবেন চন্দ্র বর্মনের ছেলে সুবল চন্দ্র বর্মনের (২২) সঙ্গে প্রতিবেশী দশম শ্রেণির ছাত্রীর (১৬) প্রায় এক বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের সম্পর্ক চলাকালীন সুবল চন্দ্র মেয়েটিকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বিষয়টি জানাজানি হলে উভয় পরিবারের মধ্যে বৈঠক হয় এবং তাদের বিয়ের আলোচনা চূড়ান্ত করা হয়। তবে ছেলের পরিবার নানা অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে, যার ফলে ছাত্রীর পরিবার ক্ষুব্ধ হয়ে উলিপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, ছেলের পরিবার সুবল চন্দ্রকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করলে, ১২ নভেম্বর ওই ছাত্রী বিয়ের দাবিতে ছেলের বাড়িতে এসে অবস্থান শুরু করেন। সেদিন থেকে তিনি ছেলের বাড়িতে অবস্থান করছেন। এই সময়ের মধ্যে, সুবল চন্দ্র মামলার পর গা-ঢাকা দেন, ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।
রবিবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে সেবেন চন্দ্র বর্মনের বাড়িতে গিয়ে ওই ছাত্রীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, “আমি দীর্ঘদিন ধরে সুবলের সঙ্গে প্রেম করেছি। সে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আমার ক্ষতি করেছে। তার পরিবার সালিশে আমাদের বিয়ের কথা মেনে নিয়েছিল, কিন্তু ছেলের বাবা গোপনে তাকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিল। এই খবর জানার পর আমি বিয়ের দাবিতে এখানে এসেছি এবং যতদিন বিয়ে না হবে, ততদিন এখান থেকে যাব না।”
সুবল চন্দ্রের মা কাঞ্চন বালা বলেন, “বিয়ের জন্য সালিশ হয়েছিল, কিন্তু ছেলে সেখানে উপস্থিত ছিল না। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ায় সে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। এখন আমাদের বিপদে পড়তে হয়েছে।”
ধরণীবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছামাদ মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “মেয়েটি কয়েকদিন ধরে বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে অবস্থান করছেন। কিছুদিন আগে সালিশ হয়েছিল, যেখানে ছেলের বাবা বিষয়টি মেনে নিয়েছিলেন, কিন্তু ছেলে সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। এখন ছেলের পরিবারের অস্বীকৃতির কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।”
উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ জিল্লুর রহমান জানান, “ধর্ষণের অভিযোগে সুবল চন্দ্রকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
//নিউজ/উলিপুর//জাহিদ/নভেম্বর/১৭/২৪