।। নিউজ ডেস্ক ।।
উলিপুরে এখন পাটের চেয়ে পাটকাঠির কদর বাড়ছে। পাট ও পাটকাঠির ভালো দামে চাষিরা পাচ্ছেন আশার আলো। আবহমান কাল থেকেই রান্নার জ্বালানি, ঘরের বেড়া, পানের বরজ, গৃহস্থালী সামগ্রীসহ নানা কাজে পাটকাঠি অপরিহার্য। এ কারণে পাটকাঠির মূল্য ক্রমেই বাড়ছে। একসময় কেবল রান্নার জ্বালানি ও বেড়ার কাজে ব্যবহার হলেও এখন এর বহুমুখী ব্যবহারের কারণে পাটকাঠির কদর কয়েকগুণ বেড়ে গেছে।
উলিপুরের ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ও ধরলা নদী ঘেঁষা সাহেবের আলগা, বেগমগঞ্জ, হাতিয়া, বুড়াবুড়ি, দলদলিয়া, থেতরাই, গুনাইগাছ, ও বজরা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, খাল-বিল ও নদীর ধারে শত শত কৃষক দিনমজুর পাট থেকে আঁশ ছাড়াচ্ছেন। এরপর দেখা গেছে গৃহবধূরা রোদে রাস্তার দু’পাশে এবং বিভিন্ন স্থানে পাট ও পাটকাঠি শুকাচ্ছেন। অনেকে দিনমজুর মজুরির বিনিময়ে পাটকাঠি সংগ্রহ করে বাড়ি ফিরছেন।
দিনমজুর আকবর আলী জানালেন, প্রতিদিনের রান্নার চুলায় পাটকাঠি লাগে, তাই পাট থেকে আঁশ ছাড়ানোর বিনিময়ে তিনি পাটকাঠি সংগ্রহ করেন।
থেতরাই ইউনিয়নের দড়ি কিশোরপুর গ্রামের লুৎফা রহমান বলেন, “জ্বালানির জন্য পাটকাঠি খুবই প্রয়োজন, এ জন্যই আমি পাট চাষ করেছি।”
উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ব্যবসায়ীরা চাষিদের কাছ থেকে কম দামে পাটকাঠি কিনে তা ভ্যানে করে হাট-বাজারে নিয়ে গিয়ে চড়া দামে বিক্রি করছেন। ব্যবসায়ী মজিবর রহমান জানান, বর্তমানে পাটকাঠির প্রচুর চাহিদা। তিনি বলেন, “চাষিদের কাছ থেকে ৮/১০ টাকা মুঠোপ্রতি কিনে শহর বা গ্রামে গিয়ে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করি, এতে ভ্যানপ্রতি এক থেকে দেড় হাজার টাকা লাভ হয়।”
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, এ বছর উপজেলায় ২ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোশাররফ হোসেন বলেন, “পাট চাষিদের জন্য এটি একটি অর্থকরী ফসল। পাটকাঠি শুধু আর্থিক সুবিধাই নয়, চাষিদের নানাবিধ কাজেও লাগে।”