।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
রমনা লোকাল ট্রেনের হুইসেল বাজিয়ে সাড়ে ৪ বছর পর ফিরলো চিলমারীর রমনাবাজারে। উপজেলার বালাবাড়ি ও রমনা ২টি স্টেশনে হুইসেল বাজিয়ে থামবে ট্রেন আর সেবা পাবে জনসাধারণ। স্টেশন আর লাইন থাকলেও রমনা রুটে করোনায় সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া লোকাল ট্রেনের চাকা আবারও ঘুরতে শুরু করলো। লোকাল ট্রেন ফিরে পেয়ে আশার আলো জাগতে শুরু করেছে যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের। স্বল্প ভাড়ায় সহজেই ট্রেনে চিলমারী’র রমনা থেকে রংপুর ও পার্বতীপুর থেকে চিলমারী’র রমনা যাতায়াত করলে সুবিধা পাবে জনসাধারণ।
রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সাবেক সভাপতি ও শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি নাহিদ হাসান বলেন, আগে রমনা রেলপথে ৪টি লোকাল ট্রেন চলতো, তা বন্ধ হয়ে পড়েছে আপাতত একটি চলতে শুরু করলো পর্যায়ক্রমে বাকি ৩টি ট্রেনও চালু হবে বলে আশা করছি।
জানা গেছে, ১৯৬৫ সালের দিকে চিলমারীতে ট্রেন চালু হয় এবং নদী ভাঙ্গনের কারণে পরে ১৯৭৭ সালের দিকে রমনা স্টেশন প্রতিষ্ঠিত হয়ে ৪টি ট্রেন নিয়োমিত চলাচল করে আসলেও হঠাৎ করে দুটি বন্ধ হয় এবং দুটি লোকাল ট্রেন চলাচল থাকে। কিন্তু পরবর্তিতে করোনার থাবায় ও লকডাউনে ২০২০ সালের ২৩ মার্চ চিলমারী’র রমনা থেকে পার্বতীপুর লোকাল ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পর আর ফিরে আসেনি প্রায় সাড়ে বছরেও।
বিভিন্ন সংকট দেখিয়ে ট্রেনটি চালু না করে অজ্ঞাত কারণে ট্রেনটি বন্ধ রেখেছিল কর্তৃপক্ষ। যদিও পরে রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটিসহ স্থানীয়দের দাবির মুখে ২০২২ সালের ১মার্চ থেকে কর্তৃপক্ষ কমিউটার নামে একটি ট্রেন চালু করে। কিন্তু পুর্বের লোকাল ট্রেনটির চালুর কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় আবারো দাবি তোলেন রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটি ও স্থানীয়রা।
অবশেষে প্রায় সাড়ে চার বছর আগে চলে গিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়া লোকাল ট্রেনটি চালু করলেন কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সময় পর লোকাল ট্রেনটি চালু হওয়ায় স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে জনসাধারণের মাঝে। ট্রেনটি সময় মতো চলার সাথে পুর্বের ন্যায় বাকি ট্রেন গুলো চালু হলে কৃষকরা কৃষি পণ্য, ব্যবসায়ীরা তাদের মালমাল সল্পমূল্যে আনা নেয়া করতে পারবে। শুধু তাই নয় শিক্ষার্থীরা এতে উপকৃত হবে সুবিধা পাবে চিলমারী, রৌমারী, রাজীবপুরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
রমনা স্টেশন এলাকার আব্দুর রহিম, মুকুল বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ৪ বছর পর এই স্টেশনে আবার লোকাল ট্রেনের হুইসেল বাজলো শুনে আমরা অত্যন্ত খুশি। রেলপথে যাতায়াতসহ পণ্য আনা নেয়ার সুবিধা থেকে দীর্ঘ সময় আমরা বঞ্চিত ছিলাম এখন বাকি ট্রেন গুলো চালু হলে ফিরে আসবে ঐতিহ্য বঞ্চিত থাকবে না উত্তরের মানুষ। এদিকে চিলমারী বন্দরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হলে রেলপথের গুরুত্ব অনেক গুন বেড়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন ব্যবসায়ীরা, এই জন্য তারা রেল পথের মেরামতসহ দ্রুত বাকি লোকাল ট্রেনসহ আন্তঃনগর ট্রেন চিলমারী পর্যন্ত চালুর দাবি জানান।
লোকাল ট্রেন চালু ও রমনা রেলওয়ে স্টেশন পরিদর্শন শেষে বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক লালমনিরহাট মোঃ আব্দুস সালাম বলেন, দ্রুত রেল লাইন সংস্কার করে স্থানীয়দের সাথে আলোচনা করে সুবিধা সময় এবং আয়ের দিক লক্ষ করে আরও ট্রেন চালু করা হবে। এসময় বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সাবেক সভাপতি ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ট্রাষ্টি নাহিদ হাসান নলেজ। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপি’র সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন সরকার শিরিন, কৃষকদল নেতা মাহমুদুল হাসান বাবু, যুবনেতা তইবুর রহমান, উলিপুর সচেতন নাগরিক সমাজের মুখপাত্র মতলেবুর রহমান, চিলমারী প্রেস ক্লাস সভাপতি নজরুল ইসলাম সাবু, প্রেস ক্লাব চিলমারী সভাপতি মনিরুল আলম লিটু, রেলওয়ে কর্মকর্তা, রেল-নৌ, যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণকমিটির সদস্য, স্থানীয় মানুষজনসহ বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/অক্টোবর/২১/২৪