।। নিউজ ডেস্ক ।।
আজ শুভ মহালয়ার মধ্য দিয়ে সূচনা হলো দেবী পক্ষের। দিনটি উদযাপনের মধ্য দিয়ে দেশের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আজ। মন্দির ও মণ্ডপে দেবী দুর্গার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ দিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন উলিপুরের কারিগররা। মণ্ডপে মণ্ডপে প্রতিযোগিতা চলছে কে কত ভালো প্রতিমা তৈরি করে ভক্তদের মন জয় করতে পারে। সামর্থ্য অনুযায়ী স্থানীয় ও বিভিন্ন এলাকা থেকে কারিগর এনে প্রতিমা তৈরি করছেন পূজামণ্ডপ কমিটি। প্রতিমার কাঠামোতে মাটি লাগানোর কাজ শেষ করে শুকাচ্ছেন । আবার কেউ শুকানো প্রতিমাতে রং তুলির আঁচর লাগানোর কাজ করেছেন। সনাতনী পঞ্জিকা অনুযায়ী, আগামী ২ অক্টোবর মহালয়া, ৮ অক্টোবর শ্রী পঞ্চমীতে সায়ং কালে দেবীর বোঁধন, ৯ অক্টোবর ষষ্ট্যাদিকল্পারম্ভ, আমন্ত্রন ও অধিবাস, ১০ অক্টোবর নব-পত্রিকা প্রবেশান্তে সপ্তমী বিহিত পুজা, ১১ অক্টোবর মহা-অষ্টমী, সন্ধি ও মহানবমী পুজা এবং ১২ অক্টোবর দশমী বিহিত পুজান্তে দর্পন বিসর্জন।
উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, কাদা-মাটি, বাঁশ, কাঠ, খড়, সুতলি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিলতিল করে গড়ে তোলা দেবীদুর্গার প্রতিমা তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময়পার করছেন প্রতিমা কারিগররা। উলিপুর পৌরসভার পূর্ব শিববাড়ি গ্ৰামের প্রতিমা তৈরির ব্যবসায়ী কারিগর গোবিন্দ রায়(৩৫) বলেন, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিমার চাহিদা কম। গত বছর ১২টি প্রতিমা তৈরি করেছি। এ বছর ৮টি প্রতিমা তৈরি অর্ডার পেয়েছি। বাজারে সব কিছুরই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণত প্রতিটা প্রতিমা তৈরিতে ব্যয় হয় প্রায় ৮ থেকে ১০হাজার টাকা। আমরা বিক্রি করি ১৪ থেকে ১৫ হাজার টাকা। দিন-রাত স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কাজ করেও এখন আর আগের মত লাভ হয় না। আরেক প্রতিমা কারিগর কাশিনাথ রায় (৬০) জানান, গত বছর ১২টি প্রতিমা তৈরি করেছি। এবার চাহিদা কম মাত্র ৭টি প্রতিমা তৈরি অর্ডার পেয়েছি। তবে গত বছরের চেয়ে প্রতিমার চাহিদা অনেক কম।
বাংলাদেশ ব্রাহ্মণ সংসদ উপজেলা শাখার সভাপতি পূর্ন চন্দ্র গোস্বামী বলেন, প্রতিটি পূজামণ্ডপে সময়সূচি অনুযায়ী পূজা সমাপন ও চন্ডীপাঠ করতে হবে। আযান ও নামাজের সময়সূচি মেনে চলতে হবে।
উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সৌমেন্দ্র প্রসাদ পান্ডে গবা বলেন, পুজার এখনো সঠিক হিসাব পাওয়া যায়নি। অনুমান করা হচ্ছে উপজেলায় শতাধিক দুর্গাপূজা হতে পারে। তবে এ বছর অস্থায়ী মন্দিরে পূজা উদযাপন করতে নিষেধ করা হয়েছে।
উলিপুর থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, পূজা মণ্ডপ গুলোতে কঠোর নিরাপত্তা থাকবে। যাতে কোথাও কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলার না ঘটে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বদা তৎপর থাকবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ আতাউর রহমান বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা যাতে প্রতিটি পূজামণ্ডপে নির্বিগ্ন এবং সুন্দরভাবে পূজা উদযাপন করতে পারে সেজন্য উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহীনির পক্ষ থেকে কড়া নজরদারি থাকবে।