।। নিউজ ডেস্ক ।।
অতিবৃষ্টির ফলে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে বৃদ্ধি পেয়েছে কুড়িগ্রামের নদ-নদীর পানি। ফলে আকস্মিক বন্যা ও নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে কয়েক হাজার মানুষ।
তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন চরের পাশাপাশি নিম্নাাঞ্চলগুলো ডুবে গেছে। ফলে এসকল এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ডুবে গেছে সবজি ও ধান ক্ষেতসহ বিভিন্ন আবাদি জমি। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় নদী ভাঙন ও ফসল নিয়ে আতঙ্কে আছে এসব এলাকার মানুষজন।
বন্যায় তিস্তার তীরবর্তী রাজারহাট, উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার ৬ ইউনিয়নের চর ও নিম্নাঞ্চলের শতাধিক ঘরবাড়ি এবং গ্রামীণ কাঁচা সড়ক নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। এতে শুধু রাজারহাট উপজেলায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে প্রায় ৬০০ পরিবার। এছাড়াও ৩ শতাধিক হেক্টর জমিতে রোপণকৃত রোপা আমন ও মৌসুমী ফসলের ক্ষেত পানির নিচে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগ।
রাজারহাটের তিস্তাপাড়ের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘তিস্তার পানি উঠি হামার বাড়িা তলে গেইছে। বেটা-বেটিক ধরি খুব কষ্টে আছি।’ পাশের গ্রাম খিতাব খাঁ এর আরেক কৃষক আলম বাদশা বলেন, ’আমার ৫ শতক জমির বাদাম ক্ষেত তিস্তার পানিত তলে গেইছে। দেখেন পানি হু হু করে বাড়তেছে, পানির খুব স্রোত।’ আবাদি জমি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণে অনেক কৃষক জমির ধান কাঁচা অবস্থায় কেটে নিয়ে যাচ্ছে।
রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাদিজা বেগম বলেন, আমার উপজেলায় প্রায় ৬শ পরিবার পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। গতকাল কিছু পরিবারকে শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে এবং পাশাপাশি মেডিকেল টিমও কাজ করছে।’
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, আকস্মিক তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার ফলে, ফসলের ক্ষেত ডুবে গেছে। আমাদের লোকজন মাঠে কাজ করছে, কি পরিমাণ ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে তা পরে জানা যাবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে, তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, অপরদিকে ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ০৩ দিন পর্যন্ত কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধকুমার নদ-নদীর পানি বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।