।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চিলমারীতে ২ বছরেও শেষ হয় বীর নিবাসের কাজ। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দকৃত বীর নিবাসের ঘর পেয়ে যেন চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রাণীগঞ্জ এলাকার আব্দুল খালেক। শয্যাশায়ী এ মুক্তিযোদ্ধা জীবনের শেষ নি:শ্বাস এ ঘরে ফেলতে পারবেন কিনা এ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের মতো বীর নিবাসের ঘর নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বালাবাড়ী হাট কিসামত বানু এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী, রানীগঞ্জ বাজার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রিয়াজুল হক সর্দার, মদনমোহন এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম ও ভাটিয়া পাড়ার শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সাহের বানু বেগম।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী বলেন, বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি। ইউএনও ও পিআইও সাহেব শুধুই আশ্বাস দিয়েছেন। উপায়ান্ত না পেয়ে অসমাপ্ত ঘরের দরজা ও জানালায় টিনের বেড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে।
জানাগেছে, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট চিলমারী উপজেলায় দ্বিতীয় দফায় ৩৫টি বীর নিবাস নির্মাণের বরাদ্দ দেয় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। উপজেলা প্রশাসন ও ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস বাস্তবায়নের কাজ করছেন। এক তলা বিশিষ্ট ৭৩২ বর্গফুট আয়তনের বীর নিবাসের এই বাড়িতে দুটি শয়নকক্ষ, একটি বসার কক্ষ (ড্রয়িংরুম), একটি খাওয়ার কক্ষ (ডাইনিং), একটি রান্নাঘর, একটি বারান্দা ও দুটি শৌচাগার রয়েছে। কিন্তু দ্বিতীয় দফার ৩৫টি বীর নিবাসের মধ্যে ৩০টির কাজ শেষ হলেও দুই বছরেও বাকি পাঁচটির কাজ শেষ হয়নি। ঠিকাদার কোনোটির ৭০ শতাংশ, কোনোটির ৮০ শতাংশ কাজ করার পর চলে গেছেন। ৫টি বীর নিবাস নির্মানের কাজ করছেন ঠিকাদার নুরুজ্জামান আজাদ জামান। তিনি চিলমারী উপজেলা যুবলীগের নেতা ও সাবেক উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান। সরেজমিন দেখা গেছে, নির্মাণাধীন বীর নিবাসের দরজা, জানালা লাগানো হয়নি। দেয়া হয়নি ইলেকট্রিক সংযোগ এমনকি করা হয়নি রং।
ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ ওই ঠিকাদার কাজ শেষ না করেই দফায় দফায় বিলের টাকাও উত্তোলন করেছেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক, কাজটি যথাসময়ে শেষ না করে মুক্তিযোদ্ধাদের হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী নুরুজ্জামান আজাদ জামানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: মোশাররফ হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে ওই ঠিকাদারকে শোকজ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/সেপ্টেম্বর/১৭/২৪