।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
ভূরুঙ্গামারীর কামাত আঙ্গারিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমান এর বিরুদ্ধে নিবন্ধন সনদ জালিয়াতি, নিয়োগ বাণিজ্য, স্বেচ্ছাচারিতাসজ ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের দাবিতে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ২২ বছর অফিস সহকারি পে-চাকরি করার পর জালিয়াতি করে চলতি বছরের আগস্ট মাসে অফিস সহকারি সফিয়ার রহমানকে ইবতেদায়ী জুনিয়র শিক্ষক দেখিয়ে নতুন করে এমপিও ভূক্ত করেন সুপার। অথচ অফিস সহকারী পে ২০০২ সালে (ইনডেক্স ২৬৯২৩৩২) নিয়োগ পান মোঃ সফিয়ার রহমান এবং ২০১৪ সালের জুলাই মাসে উচ্চতর স্কেল প্রাপ্ত হন। এদিকে অফিস সহকারি পদ শূন্য দেখিয়ে গোপনে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে উক্ত পদে (এসিও) মোঃ খালেদুজ্জামানকে (সুপারের আপন ভাগিনা) নিয়োগ দেন। যার ইনডেক্স (গ০০৫৪১৮০), এমপিও ভুক্তির তারিখ মার্চ/২৪। তার জন্ম তারিখ ১৫/০২/১৯৭৮ ইং। সেই হিসেবে তার বর্তমান বয়স ৪৬ পেরিয়ে গেছে যা এমপিও ভুক্তির শর্তকে লঙ্ঘন করে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মাদ্রাসার সুপার ১৮ ডিসেম্বর ২০১৪ তারিখে তার আপন ভাতিজা মোস্তাফিজুর রহমানকে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ দেন। নিয়োগ বিধিমালায় নিবন্ধন সন বাধ্যতামূলক হলেও উক্ত ব্যক্তির কোনো নিবন্ধন সনদ নেই। সুপার অনলাইনে সার্চ দিয়ে একই নামীয় অন্য ব্যক্তির নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ০১/০৩/২০১৮ ইং তারিখে এমপিওভুক্তি করান এবং তার ইনডেক্স নম্বর (ঘ২১২১৭৮৩)।
এদিকে মাদরাসার কর্মচারী মজিবর রহমান গত ০৫/০৮/২০০০ ইং তারিখে এম.এল.এস.এস পদে যোগদান করেন এবং ২৫/১০/২০০১ ইং তারিখে এমপিও ভুক্ত হন। জাতীয় পরিচয় পত্রে জন্ম তারিখ ভুল থাকায় এম.পিও কপিতে বেতন ভাতা আসলেও নিজের ক্ষমতার অপব্যবহার করে একতরফা সিদ্ধান্তে গত ৮ মাস থেকে তা স্থগিত করে রেখেছেন। এছাড়াও উক্ত কর্মচারীর চাকরী জীবনের ২২ বছর অতিক্রান্ত হলেও সুপার উচ্চতর স্কেল থেকে বঞ্চিত রেখেছেন।
এছাড়াও উন্নয়নের জন্য বরাদ্দকৃত বিপুল পরিমাণ রাষ্ট্রীয় অর্থ হাতিয়ে নেন। স্বেচ্ছাচারিতা এবং স্থানীয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে শিক্ষক, কর্মচারীরদের মাসিক বেতন ও উচ্চতর স্কেলের রেজুলেশনে স্বাক্ষর দেয়ার সময়ে টাকা দাবি করেন এবং টাকা না দিলে বেতন ভাতা বন্ধ রেখে বিভিন্নভাবে হয়রানি ও হুমকি প্রদান করেন। উক্ত মাদরাসার সুপার মোঃ সাঈদুর রহমান ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রী কলেজে প্রভাষক (ইসলাম শিক্ষা) পদেও বর্তমানে নিয়োগপ্রাপ্ত এবং একইসাথে দুই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সাইদুর রহমান এর বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা পদত্যাগ চেয়ে মানববন্ধন করেছে।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার সাইদুর রহমান তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, একটি চিহ্নিত মহল উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, এ বিষয়ে মাদ্রাসা সুপারকে সতর্ক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ গুলো তদন্ত করা হবে।
//নিউজ/ভূরুঙ্গামারী//মাইদুল/সেপ্টেম্বর/১৪/২৪