।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী ভুয়া সমন্বয়কদের বিষয়ে অবহিত করা ও সন্ত্রাস, লুটপাট এবং সহিংসতা বন্ধের জন্য সংবাদ সম্মেলন করেছে মূল আন্দোলনকারীরা।
তারা বলেন, দেশে দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জিত হয়। ছাত্র-জনতা দেশ গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় ও সিনিয়র সমন্বয়কদের পরামর্শ ও দাবির প্রেক্ষিতে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হতে যাচ্ছে। এ অবস্থায় অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে, একটি স্বার্থান্বেষী মহল কুড়িগ্রামের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাস লুটপাট এবং সহিংসতা ঘটাতে থাকে যার সাথে কুড়িগ্রামের আন্দোলনকারী কোনো ছাত্রের সংশ্লিষ্টতা নেই। তবুও দুষ্কৃতিকারীরা আমাদের মতো আন্দোলনকারী পরিচয়ে বিভিন্ন অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোটা আন্দোলনকারীর সমন্বয়ক পরিচয়ে নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজী করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। একইভাবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন এই আন্দোলনের মূল সংগঠক হিসেবে দাবী করছে এবং তাদের কেউ কেউ নিজেদের জেলার মূল সমন্বয়ক হিসেবে দাবী করে অপপ্রচার চালাচ্ছে যা মোটেও কাম্য নয়।
এসময় তারা জেলার সমন্বয়কারী হিসেবে ৪১জনের নাম প্রকাশ করে। তাদের দাবী আন্দোলনের শুরু থেকে যারা জড়িত ছিল তাদের নামের তালিকা আইনশৃংখলা বাহিনীসহ কেন্দ্রীয় মূল ৬জন সমন্বয়কের কাছেও রয়েছে। তাই এই বিষয়ে সামাজিক মাধ্যমসহ বিভিন্ন জায়গায় বিভ্রান্ত না ছড়ানো আহবান জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সৈয়দ শামসুল হক মিলনায়নে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কুড়িগ্রামের কোটা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কারীর ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অন্যতম সংগঠক লাইলাতুল ইসলাম রুমান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অংশ হিসেবে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী সরকার ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। আন্দোলনের শুরু থেকে কুড়িগ্রামের ছাত্ররা মানে আমরা কয়েকজন কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে আন্দোলনের ডাক দিয়ে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু করেছিলাম। আমরা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিকভাবে আন্দোলন করছিলাম। সেসময় ছাত্রলীগের বাধা ও হামলার মুখে আন্দোলন থেকে অনেকে সরে যায়। কিন্তু আমরা শতবাধা ও রক্ত চক্ষুর রোষানলের মধ্যে থেকেও আন্দোলন চালিয়ে যাই। এরই মধ্যে অন্যান্য জেলার মতো কুড়িগ্রাম জেলায় আন্দোলনকারী ছাত্রদের মধ্যে সমন্বয়ক হিসেবে আমরা ক’জন তালিকাভুক্ত করি। সারাদেশের ন্যায় কুড়িগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে আমাদের সমন্বয়কারীদের নেতৃত্বে কোটাবিরোধী সে আন্দোলন বেগবান হতে থাকে। এক পর্যায়ে স্বৈরাচারী সরকার দেশের ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। রাষ্ট্র ক্ষমতা সশস্ত্র বাহিনীর হাতে চলে যায় ও অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়। দেশের কোনো সম্পদের কোনো ধরনের ক্ষতি হোক তা আমরা চাই না, কোনো রাজনৈতিক দলের ফায়দা লুটে নেবার হাতিয়ার হতে চাই না। সন্ত্রাস, লুটপাট এবং সহিংসতা বন্ধ হোক। আমাদের শান্ত কুড়িগ্রামে শান্তি ফিরে আসুক। সারা দেশে শান্তি ফিরে আসুক।
অন্যদিকে যারা ভুয়া সমন্বয়ক হিসেবে নিজেদের পক্ষে অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের অপপ্রচার বন্ধ করার জন্য আহ্বান করছি। কোনো ধরণের ভুয়া সমন্বয়ক পরিচয় দেওয়া থেকে তাদের বিরত থাকার অনুরোধ করছি। সবাই দেশের জন্য কাজ করেছি, করে যাবো ইনশাল্লাহ।
এ বিষয়ে আমাদের কুড়িগ্রামের সমন্বয়কদের একটি নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়। তারা হলেন, উপদেষ্টা হিসেবে ফয়সাল আহমেদ (বেরোবি, রংপুর), আল হেলাল হোসেন ইলমান (এআইইউবি)। সমন্বয়ক-লাইলাতুল ইসলাম রুমান, নাজমুস সাকিব শাহী, রাফিউল ইসলাম রাফি, আল-আকসা সৌখিন, কাজি তাবাসসুম হক কর্ণিয়া, তানভীর ইসলাম, অরিত্র সাহা বর্ণ, নাহিদ হাসান নাঈম, আবুল বাসার (রাহুল), হাবিবুর রহমান সাগর, আশরাফুল আলম চমক, রেজাউল ইসলাম রেজা,শাহরিয়া ইসলাম ফাহিম,মাজিদুল ইসলাম মাহিদ, রাকিব আল হাসান রনি, অমি শাহারিয়ার সৃষ্টি, ওম রয়, রাজু আহমেদ,শাহরিয়া ইসলাম জিদ্দি,সাইনান আহমেদ, অর্পি, আফরা আনান প্রভা, বর্ষণ বেনজির সিদ্দিক আয়াত,জান্নাতুল যুথি, মুশফিক হক, প্রণব পাল, জোবাইদুল ইসলাম, জিতু, রাহাত খান, তাসফিয়া হোসেম স্মরণ, লাবিবা সুবহা, রাকিব, সায়মন শাহরিয়ার সতেজ, মেহেদী হাসান প্রমুখ।