আতিক মেসবাহ লগ্ন :
নদীর বুকে জেগে ওঠা পরিত্যক্ত ধু ধু বালুচর। সেই বালুচরে সবুজায়নের যুদ্ধে নেমেছে চাষীরা। এই যুদ্ধ জয় এতোটা সহজ আগে ভাবতেই পারেনি এই এলাকার নদী ভাঙ্গনে নিঃস্ব হওয়া ভিটেমাটি হারা চাষী ও শ্রমজীবি মানুষরা। ধুধু বালু চরে কুমড়া চাষীরা জানান, বালুচরে কোনো ফসল ফলানো যাবে এটা আমরা স্বপ্নেও ভাবিনি। ইইপি সিড়ি (ডিএফআইডি-জিওবি) মিনিষ্ট্রি অব রুলার ডেভলোপমেন্ট এন্ড কো- অপারেটিভ পার্টনার পিএনজিও ইউডিপিএস এর অর্থায়নে প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন নামের একটি এনজিও প্রথমে আমাদের কুমড়ো চাষের প্রশিক্ষণ দেয়। পরে বালুচরে কুমড়োর চারা রোপন করতে বলে। এখন বালুচরে বপন করা কুমড়োর চারা আমাদের জীবনে সচ্ছলতা এনে দিয়েছে। এবারই প্রথম এই চরে কুমড়া চাষ করে সফলতা পেয়ে নদীতে জেগে উঠা বালুময় চরে ৬ মাসের বিভিন্ন ফসল আবাদ করে ঘুরে দাড়ানোর স্বপ্ন দেখছে।কৃষক মতলিববর মিয়া উলিপুর ডট কমকে বলেন ” কুমড়া চাষ করি হামার ভাগ্য বদলী গেইছে বাহে”। উলিপুরের দলদলিয়া ইউনিয়নের তিস্তা নদীর বালুচরে গিয়ে দেখা যায়, সবুজে ভরা কুমড়ো ক্ষেত। গাছে গাছে কাচাপাকা, ছোট-বড় অসংখ্য কুমড়োয় ছেয়ে গেছে বালু চর। সম্প্রতি জেলার উলিপুর উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের কর্পুরা গ্রামের তিস্তার বালুচর ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়েছে। রংপুর ডিএফআইডির ইইপি-সিঁড়ি কর্মসূচি, বাংলাদেশ সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন- বাংলাদেশ যৌথভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতা দিচ্ছে। স্থানীয় একটি বেসরকারি সংস্থা এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।২০১৪ থেকে এই চরে কুমড়ার আবাদ হয়ে আচ্ছে। প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন-বাংলাদেশ এর রংপুর অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারি, লালমনির হাট, গাইবান্ধা-এই পাঁচ জেলায় ১৭ হাজার মেট্রিক টন কুমড়ার আবাদ হয়েছে। যা লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ২ হাজার মেট্রিক টন বেশি।বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ভুমিহীন অতিদরিদ্র পরিবারগুলো পতিত চর ব্যবহার করে একই সাথে যেমন দেশের ভূমির স্বল্পতা পুরণে কাজ করছে এবং সার্বিকভাবে দেশের কৃষি অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে।