।। নিউজ ডেস্ক ।।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনের জের ধরে ঢাকাসহ দেশের নানা জায়গায় গ্রেফতার ও মামলার সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। সহিংসতার ঘটনায় শুধু ফেসবুকে পোস্ট দেয়া কিংবা নিহতদের নিয়ে কথা বলার অভিযোগেও আটক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ওই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু’জন সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম ও আরিফ সোহেলকে সাদা পোশাকের অস্ত্রধারী ব্যক্তিরা তুলে নেয়ার অভিযোগ করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা।
ঢাকার পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে নুসরাত তাবাসসুম ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে তাদের হেফাজতে নেয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। তবে আরিফ সোহেল সম্পর্কে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।
এর আগে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া আরো পাঁচ জন সমন্বয়ককে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। তাদের কোন মামলায় গ্রেফতার দেখানো না হলেও পুলিশি হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের ‘নিরাপত্তার স্বার্থে’ হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশীদ। পুলিশ দাবি করেছে, সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতারে তারা অভিযান চালাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জের ধরে গত ষোল থেকে উনিশে জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে সহিংসতায় অন্তত দুশো মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে বাংলাদেশের গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
তবে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল রোববারই বলেছেন এবারের সহিংসতায় ১৪৭ জন মারা গেছে যার মধ্যে ১১ জন আওয়ামী লীগ কর্মী। বাকীরা শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।
আবার এই সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে সারাদেশে এ পর্যন্ত অন্তত নয় হাজার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু পুরনো মামলার আসামি থাকলেও বাকীরা কোটা আন্দোলনের সময় সহিংসতায় জড়িত ছিলেন বলে দাবি করছে পুলিশ।
মধ্যরাতে বিভিন্ন এলাকায় ব্লকরেইড দিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, এসব অভিযানে অনেক নিরপরাধ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করছে পুলিশ। সহিংসতায় জড়িত না থাকলেও শিক্ষার্থী পরিচয় পেলেই তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরও গ্রেফতার করা হচ্ছে, এমন অভিযোগও উঠেছে।
তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র (ডিসি মিডিয়া) ফারুক হোসেন বলছেন সব ডকুমেন্টস পর্যালোচনার পরই নিশ্চিত হয়ে একজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার বা আটকের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার জুনায়েদ আলম বলেছেন ডিবি পুলিশ যাদের আটক করছে তাদের সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে আটক করছে, ঢালাও ভাবে কোন গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
সূত্রঃ বিবিসি।