।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
উজানের ঢল সাথে টানা বৃষ্টি বাড়তে শুরু করেছে ব্রহ্মপুত্রের পানি। চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় চিলমারীর নদীর তীরবর্তী এলাকাসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে। বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ইতিমধ্যে উপজেলার প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিভিন্ন এলাকার সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্যা পানি বাড়িঘরে উঠে পড়ায় পানিবন্দি মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। পানি বৃদ্ধির কারণে চরাঞ্চল গুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন, হুমকির মুখে ডানতীর রক্ষা প্রকল্প। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকাল ৩ টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৯ সে:মি: উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি সাথে উজানের ঢলে বেড়েছে নদ-নদীর পানি। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চিলমারীর রানীগঞ্জ ইউনিয়নের নয়াবস, মজারটারি, সরকারপাড়া, বড়ভিটারচর, চিলমারী ইউনিয়নের শাখাহাতি, গাজিরপাড়া, নয়ারহাট ইউনিয়নের কাজলডাংগা, গয়নালপটল, নয়ারহাট গ্রাম, অষ্টমীরচর ইউনিয়নের খামারবাসপাতার, সালিপাড়া, দীঘলকান্দি, নটারকান্দি, রমনা মডেল ইউনিয়নের টোনগ্রাম, ব্যাপারিপাড়া, গুরেতিপাড়া, জোড়গাছ পুরাতন বাজারসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় প্রায় ৮ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে দুর্ভোগ। বেশি করে দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েছে নদীর তীরবর্তী মানুষজন।
পানি বৃদ্ধির কারনে বেশকিছু এলাকার সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিছিন্ন হয়ে পড়েছে। টানা বৃষ্টির কারনে উপজেলা জোড়গাছ সড়ক, কড়াইবড়িশাল, গাজিরপাড়াসহ বেশ কিছু এলাকার রাস্তা ধসে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী।
এদিকে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় প্রতিদিন নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বাড়ছে পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা। অতিবৃষ্টি, পানি বৃদ্ধির সাথে প্রবল স্রোতের কারণে চিলমারী ইউনিয়নের শাখাপাতি, কড়াইবড়িশাল, গাজিরপাড়া, অষ্টমীর চরের নটারকান্দিসহ বেশ কিছু এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। ইতিমধ্যে ভাঙ্গনে প্রায় দেড়শতাধিক পরিবার ভিটামাটি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে।
পানিবন্দি ও ভাঙ্গন এলাকায় দুর্ভোগ ও ভোগান্তি দেখা দিলেও এরিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই সব এলাকায় সরকারী বা বে-সরকারী সহায়তা পৌঁছায়নি।
অষ্টমীরচর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব জানান, ভাঙ্গনের তীব্রতার কারনে গত কয়েকদিনে প্রায় ৬০ পরিবার তাদের বাড়িঘর হারিয়েছে দ্রুত ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা গ্রহন করা না হলে স্কুল, মাদ্রাসাসহ কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাবে।
চিলমারী ইউপি চেয়ারম্যান মো: আমিনুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন থেকে ভাঙ্গনে বাড়িঘরসহ বিদ্যুতের খুটি নদী গর্ভে বিলিন হওয়ার সাথে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে শতশত পরিবার কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন সহায়তা পায়নি।
এদিকে ভাঙ্গনের তীব্রতার কারনে গত কয়েকদিনে উপজেলার প্রায় ১৫০ পরিবার হারিয়েছে তাদের ভিটামাটি। এছাড়াও কাঁচকোল এলাকার বাঁধ ও ডানতীর রক্ষা প্রকল্পে দেখা দিয়েছে ধস বাড়ছে আতঙ্ক।
কথা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মিনহাজুল ইসলাম বলেন, ইতি মধ্যে ১৬ মে. টন চাল ও নগত অর্থ পাওয়া গিয়েছে এবং চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তা বিতরণ শুরু করা হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো: রুকুনুজ্জামান শাহিন বলেন, এটি যেহেতু প্রাকৃতিক দুর্যোগ তবে বন্যা ও ভাঙ্গন কবলিত মানুষের মাঝে ইতি মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/জুলাই/০৪/২৪