।। নিউজ ডেস্ক ।।
নাগেশ্বরীতে বন্যা শুরুর আগেই গঙ্গাধর নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের তীব্রতায় ইতোমধ্যে আবাদি জমি, ভিটেমাটি, এমনকি স্কুল, মাদ্রাসা, সড়কসহ বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়ায় অনেকেই বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে নারায়ণপুর ইউনিয়নের বালারহাট গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, একাধিকবার গঙ্গাধর নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছে এখানকার মানুষ। দুই দফা ভেঙেছে বালাহাট বাজার, কন্যামতি আকবর হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসা। গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেললেও এবার ভাঙনে ভেসে যাচ্ছে সেগুলো। ফলে আবারও ভাঙনের মুখে পড়েছে বাজার, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসাসহ পাকা সড়ক। তাই ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চান এলাকাবাসী।
স্থানীয় নওসের আলীর স্ত্রী নূর বানু বেগম জানান, গঙ্গাধর নদীর ভাঙনে তাদের বাড়ি ১০ বার ভেঙে গেছে নদীগর্ভে। নদী ভাঙতে ভাঙতে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তারা। এখন নদীর কিনারে বাড়ি তাদের। যেভাবে নদী ভাঙছে তাতে করে বসতভিটা কখন নদীর পেটে চলে যায় তার ঠিক নেই। এবার বাড়ি ভাঙলে মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকবে না তাদের।
কন্যামতি গ্রামের আমোদ আলী জানান, তাদের ৭ বিঘা জমি নদীগর্ভে চলে গেছে। এ পর্যন্ত ৩ বার ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিনি। এবারও ভাঙনের মুখে রয়েছেন। বৃদ্ধ নূর মোহাম্মদ জানান, বসতভিটা ছাড়াও তাদের আবাদি জমি, সুপারি বাগান, পুকুরসহ ভাঙনে ১৫ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করছেন তিনি। সেটিও ভাঙনের মুখে রয়েছে। এরপর স্ত্রী, সন্তান নিয়ে কোথায় থাকবেন সে ঠিকানাও নেই তাদের। বলতেই কেঁদে ফেলেন এই বদ্ধ।
কন্যামতি আকবর হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহালম মিয়া জানান, ইতোপূর্বে ২ বার তাদের বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে ভেঙে গেছে। আবারও ভাঙনের মুখে রয়েছে বিদ্যালয়টি। এবার ভেঙে গেলে লেখাপড়া থেকে বঞ্চিত হতে হবে এখানকার ছেলে-মেয়েদের।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নজর আলী জানান, কয়েবার এখানকার স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদসহ বিভিন্ন বসতভিটা ভাঙনের শিকার হয়েছে। আবারও সেগুলো ভাঙনের মুখে রয়েছে। সরকার যদি স্থায়ীভাবে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেয় তবে নিঃস্ব হয়ে পথে বসতে হবে এখানকার মানুষকে।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, নাগেশ্বরী উপজেলায় দুধকুমর নদের তীর রক্ষা প্রকল্প চলমান রয়েছে। এর বাইরে বিশেষ করে চরাঞ্চলে ভাঙন রোধে অনুমতি বা বরাদ্দ নেই, এ কারণে চরে কোনো ধরণের কাজ করতে পারছি না।