।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চিলমারীতে কৃষকদের থেকে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ করতে গিয়ে বিপাকে খাদ্যগুদাম। সক্রিয় সিন্ডিকেটের কারণে কৃষকদের তালিকায় হয়েছে হ-য-ব-র-ল অবস্থা। ধান ক্রয়ের প্রক্রিয়া ডিজিটালাইজড করা হলেও তালিকায় ভুয়া কৃষকের নাম অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে বলে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় কৃষকরা। সংশ্লিষ্ট দপ্তর দায় এড়ানোর জন্য তদবির চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠছে।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে চিলমারীর ৬টি ইউনিয়নে মোট ২২৯ জন কৃষকের কাছ থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে ৬৮৮ মেট্রিক টন ধান, ৪৫ টাকা প্রতি কেজি দরে ৪০ জন মিলারের মাধ্যমে ১ হাজার ৯৬ মে. টন চাল ও প্রতি কেজি ৩৪ টাকা দরে ৯০ মে. টন গম ক্রয় করা হবে।
চিলমারী এলএসডি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে মোট ২২৯ জন কৃষকের মধ্যে এ পর্যন্ত মঙ্গলবার (৪ জুন) ২০ জন কৃষক ৬০ মেট্রিক টন ধান গুদাম জাত করেছেন। তবে ওই ২০ জন কৃষকের তালিকা দেখাতেও অপরাগতা প্রকাশ করেন দায়িত্বরত মাইদুল ইসলাম নামে এক অফিস স্টাফ। তিনি বলেন, তালিকা নিতে হলে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের প্রত্যয়ন দেখাতে হবে।
অভিযোগ উঠেছে, সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে কৃষকের ভুয়া তালিকা দেখিয়ে গুদামে ধান দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। পরে তালিকার সূত্র ধরে উপজেলার থানাহাট, রমনা, রাণীগঞ্জ, নয়ারহাট, অষ্টমীর চর ও চিলমারী ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত কৃষকদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বেশিরভাগ মানুষ জানান, তারা চিলমারীর বাসিন্দা নন এবং বেশকিছু নম্বর বন্ধও পাওয়া যায়। তালিকাভুক্ত থানাহাট ইউনিয়নের কৃষক আমিনুল ইসলাম যার (০১৬১৩২৯০৬২১) মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি খুলনার বাসিন্দা বলে জানান। জিল্লুর রহমান (০১৭৪৩৭৪০১৭৯) মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি চিলমারী থানার এসআই দিলীপ কুমার রায় বলে পরিচয় দেন। অষ্টমীর চর ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত কৃষক আব্দুল মালেক যার (০১৬১৩২৯০৬৫২) মোবাইলে যোগযোগ করা হলে তিনি রং নম্বর বলে কেটে দেন। নয়ারহাট ইউনিয়নের তালিকাভুক্ত কৃষক সাদেক হোসেন যার (০১৭২৫৫৪৭১৯৮) যোগাযোগ করা হলে তিনি লালমনিরহাট বড়বাড়ী এলাকার বলরাম বলে পরিচয় দেন। তালিকাভুক্ত বেশকিছু কৃষকদের সাথে যোগাযোগ করা হলে প্রায় নাম ও মোবাইল নম্বরগুলো গরমিল পাওয়া যায়।
থানাহাট ইউনিয়নের পূর্বমাচাবান্দা এলাকার আমিনুল ইসলাম বীর বলেন, প্রতিবছরই সরকারিভাবে ধান ক্রয়ের সময় অভিযোগ ওঠে। ধান ক্রয়ের সময় কৃষকরা ধান গুদামে দিতে না পারলেও ভুয়া তালিকায় একটি সিন্ডিকেট চক্র ধান দেয়। অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদন প্রক্রিয়া হলে কিভাবে ভুয়া কৃষক অর্ন্তভুক্ত হয় তা খতিয়ে দেখা জরুরি।
এ বিষয়ে আমার জানা নেই জানিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কুমার প্রণয় বিষাণ দাস বলেন, কৃষকরা অ্যাপসের মাধ্যমে আবেদন করেছিল। আমরা ইউএনও স্যারকে আবেদনকৃত তালিকা সরবরাহ করেছি। তিনি লটারি করেছেন।
অনেকের মোবাইল নম্বরের মিল নেই স্বীকার করে চিলমারী উপজেলা ভার: খাদ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আরেফিন বলেন, এ পর্যন্ত ৬০ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। ধান সংগ্রহের সময় কৃষকের কৃষি কার্ড ও ভোটার আইডি মিলিয়ে ধান নেয়া হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা বলেন, কৃষি অফিসের ব্লক সুপার ভাইজার মাঠ পরিদর্শন করে যে তালিকা প্রণয়ন করে লটারির মাধ্যমে সে তালিকা ধরে আমরা ধান ক্রয় করি। এখানে আমাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/জুন/০৪/২৪