।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চর ভেলামারী আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে নদী গর্ভে বিলীন হওয়া একটি চর। আবারও নতুন করে জেগে উঠেছে গেল তিন বছর হলো। জেগে উঠা চর ভেলামারীতে নতুন করে বসতি গড়ে তুলেছেন প্রায় তিন শতাধিক পরিবার। এক সময় ভিটেমাটি হারিয়ে বিভিন্ন এলাকায় বসবাস করা চরের মানুষগুলো আবারও জেগে উঠা নিজের জমিতে ঘর করে ফসল ফলিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু এই তিন শতাধিক পরিবারের বাচ্চাগুলোর মাঝে শিক্ষার আলো দিতে নেই কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
কথা হয় চর ভেলামারীর শহিদুল্লাহ ফরাজির সঙ্গে তিনি জানান, চর ভেলামারী দীর্ঘদিন নদী গর্ভে ছিল। গেল তিন বছর হলো জেগে উঠেছে। এখানে তিন-চার শত পরিবারের বসবাস। শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক শিশুর সংখ্যা প্রায় এক থেকে দেড়শ। এই শিশুগুলো স্কুলের অভাবে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এমন অবস্থায় রাজিবপুর থানার মানবিক অফিসার্স ইনচার্জ আশিকুর রহমান পিপিএম’কে জানালে তিনি এখানে স্কুল করার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর থেকেই চলে স্কুল ঘর নির্মাণের কর্মযজ্ঞ। প্রথমে কেউ জমি দিতে রাজি না হলেও ওসি এসে তাদের বোঝালে দুজন জমি দিতে রাজি হোন। পরে কবির মন্ডল নামে এক ব্যক্তির জমিতে স্কুল নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়।
স্কুল হবে জেনে আনন্দের ছোঁয়া লেগেছে কোমলমতি শিশুদের মাঝেও। এদের মধ্যে লামিয়া নামে একজনের সঙ্গে কথা হয় সে তার অনুভূতি জানায় আমাদের। তিনি বলেন, আমি এত বড় হইছি কিন্তু স্কুল না থাকায় স্কুলে যেতে পারি নাই। কিন্তু স্যাররা আমাদের চরে স্কুল করে দিচ্ছেন। এখন থেকে আমিও স্কুলে যেতে পারব। আমি পড়াশোনা করে বড় হয়ে ডাক্তার হতে চাই।
লামিয়ার মতো অনেক শিশুই রয়েছে যাদের মোটামুটি স্কুলে যাবার পূর্ণ বয়স হয়েছে। কিন্তু স্কুলের অভাবে যেতে পারে না।
স্কুল নির্মাণের প্রধান উদ্যোক্তা রাজিবপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমান বলেন, চরে বাচ্চাদের শিক্ষার আলো ছড়াতে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। আমি বিষয়টি জানার পরে কোদালকাটির আমিনুর রহমান মাষ্টার ও ফরিদুলকে নিয়ে আলোচনা করি। পরে ওই চরে স্কুল নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেই। তারপরই আমরা সবার সাথে মতবিনিময় করি। বিষয়টি শুনে সবাই আগ্রহ দেখায়। এরপরই আমরা স্কুল করার জন্য জমি খুঁজি। ইতিমধ্যে জমি পেয়েছি, জমিতে মাটি ভরাটের কাজও শুরু হয়েছে। আমরা আশাবাদী যে আগামী ১ জুন থেকে ক্লাস শুরু করতে পারব।
//নিউজ//রাজিবপুর//সুজন-মাহমুদ/মে/১৯/২৪