।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
গরমের তীব্রতায় ঘেমে যাওয়া বা দুর্বল শরীরের সতেজতা ফেরাতে নিয়মিত গ্লুকোজ পানি খেয়ে থাকেন অনেকেই। বেশি পরিমাণে গ্লুকোজ পানি খেলে শরীর অধিক চাঙ্গা থাকবে ভেবে কেউ কেউ আবার এই পানীয় বরাবর বেশি করে খেয়ে থাকেন। কিন্তু আপনি কি জানেন? এ পানীয় আপনার শরীরের জন্য কতটুকু উপকারী বা ক্ষতিকর।
চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয়েছে, মানব শরীরে প্রতি ১ গ্রাম শর্করা থেকে প্রায় চার কিলো ক্যালোরি তাপ ও শক্তি পাওয়া যায়। তাই শক্তি উৎপাদনের সবচেয়ে সহজ ও নিরাপদ উৎস শর্করা বা গ্লুকোজ। তবে গরমে গ্লুকোজ পাউডার খাওয়া কতটা নিরাপদ তা অনেকেই সঠিক জানেন না।
দেশীয় বেশ কিছু গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গ্লুকোজ প্রস্তুতকারক বিভিন্ন কোম্পানি তাদের সেলস বাড়ানোর তাগিদে গরমে গ্লুকোজ পানি শরীরকে নানাভাবে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে এবং সেই সাথে এটি পানিশূন্যতার ঘাটতি মেটানোর পাশাপাশি লবণের ঘাটতি কমাতে কিংবা নিমেষেই শরীরে শক্তি পেতে গ্লুকোজ পানির বিকল্প নেই তথা এরকম চটকদার বিজ্ঞাপন সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরে তাঁদেরকে সহজেই আকৃষ্ট করে তোলে। তবে গ্লুকোজ পানিতে যেসব গ্লুকোজ পাউডার ব্যবহার করা হয়, তাতে চিনি বা শর্করার পরিমাণই বেশি থাকে। এসব পাউডার দ্রুত রক্তে চিনির মাত্রা এবং গ্লুকোজের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য এ ধরণের গ্লুকোজ পানি মোটেও নিরাপদ নয়।
একাধিক গবেষণায় প্রমাণিত যে, মাত্রাতিরিক্ত সুগার হার্টের রোগ ও ডিমেনশিয়ার মতো জটিল রোগের জন্য দায়ী। আপনি জানলে অবাক হবেন যে, বেশি পরিমাণে গ্লুকোজ খেলে দাঁত ক্ষয় হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে।
তবে বেশ কিছু দিক থেকে গ্লুকোজ পানি শরীরের জন্য উপকারী, এর মধ্যে অন্যতম হলো গরমে যদি হাইপোগ্লাইসেমিয়া মানে রক্তে গ্লুকোজ কমে যায়, তাহলে ওই ব্যক্তিকে গ্লুকোজ ড্রিংক খাওয়ার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া এ ধরণের গ্লুকোজ পানি পরিহার করে চলা স্বাস্থ্য এবং শরীরের জন্য ভালো। এছাড়া নিয়মিত পানি পান করা সবচেয়ে বেশি জরুরি। পর্যাপ্ত পানি পান করলে এ গরমে খুব সহজে বিভিন্ন জটিলতা থেকে স্বস্তি পাওয়া যায়। স্যালাইন ও ডাবের পানিতে বিভিন্ন জরুরি খনিজ লবণ থাকে, যা লবণের ঘাটতি প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাই পানির পাশাপাশি স্যালাইন ও ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে। যাঁদের ফলের রস বা জুস খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে, তাঁরা খেতে পারেন। তবে বাড়িতে তৈরি করে খাওয়াটাই উত্তম।