।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
গত বছরের আতঙ্ক কাটতে না কাটতেই ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে ডানতীর রক্ষা প্রকল্পে আবারও দেখা দিয়েছে ধস এবং আতঙ্ক বিয়াজ করছে কাঁচকোল এলাকাবাসীর। সেই সাথে হুমকির মুখে রয়েছে কাঁচকোল এলাকার অবদা বাঁধ, ডানতীর রক্ষা প্রকল্পসহ শহর রক্ষা বাঁধ। এলাকাবাসীর দাবি, সময় মতো ভাঙন ঠেকাতে উদ্যোগ গ্রহণ না করার কারণে ক্ষতির মুখে পড়ছে চিলমারী।
এছাড়াও এলাকাবাসীর অভিযোগ, রক্ষা প্রকল্পের ব্লক তৈরি, ভাঙন এলাকায় ব্লক স্থাপনের কাজে অনিয়ম এবং জিও ব্যাগ ফেলাতেও দুর্নীতি হয়। তবে কোনো অনিয়ম হয়নি এবং ভাঙন রোধে তারা সবসময় প্রস্তুত, এমনটাই দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ড কতৃপক্ষের।
জানা গেছে, চিলমারীকে রক্ষার জন্য ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরু হয় কয়েক বছর আগ থেকেই। সরকারের উদ্যোগে ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় স্বস্তি ফিরে পায় চিলমারীবাসী। কিন্তু প্রতি বছর বিভিন্ন স্থানে ধস দেখা দেয়ায় কাটছেনা আতঙ্ক। গত বছরের বর্ষার সময় হঠাতেই কাঁচকোল অবদা বাঁধ এলাকায় দেখা দেয় ধস, এতে হুমকির মুখে পড়ে পুরো এলাকাসহ প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধ ও রক্ষা প্রকল্প। যদিও পানি উন্নয়ন বোর্ডের চেষ্টা ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় গত বর্ষা মৌসুমে রক্ষা হলেও আতঙ্ক রয়েছে। চলতি বছরে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধির সাথে ফকিরেরহাট এলাকায় ধস দেখা দিলে আবারও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে কাঁচকোল এলাকায় ধসের স্থানে জিও ব্যাগ দিয়ে রক্ষা করা হলেও চলতি মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি শুরু হওয়ায় কাঁচকোল টি বাঁধ থেকে কাঁচকোল বাজার দক্ষিণ ওয়ারী পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার বাঁধসহ ডানতীর রক্ষা প্রকল্প রয়েছে হুমকির মুখে। ধসের কারণে অর্ধশতাধিক গ্রামসহ উপজেলা সদরবাসীর মাঝে দেখা দেয়া আতঙ্ক এখনো কাটেনি। হুমকির মুখেই কাঁচকোল বাজার, কেডি ওয়ারী, বড়ভিটা, উত্তরওয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাঁচকোল ছকিনা দাখিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন স্থাপনা।
ডানতীর রক্ষা প্রকল্পের ব্লক তৈরি, ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলানোর কাজে অনিয়ম করায় বিভিন্ন স্থানে ধস দেখা দেয় দাবি করে এলাকাবাসী জানান, গত বছর ধস দেখা দিলে সামান্য কিছু জিও ব্যাগ দিয়ে বর্ষা মৌসুম শেষ করেছে। কিন্তু নতুন করে ব্লক ফেলানো বা মেরামত না করায় ভাঙন আতঙ্ক কাটেনি মানুষের মাঝে।
তারা আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঠিক নজরদারির অভাবে এবং দুর্নীতির কারণে আজ আমরা বিপদে। এই বাঁধ ও ডানতীর রক্ষা প্রকল্প ভেঙে গেলে শুধু রানীগঞ্জ আর কাঁচকোল নয় প্রায় শতাধিক গ্রামসহ উপজেলা সদরও হুমকিতে পড়বে এবং সরকারকে কোটি কোটি টাকা লোকসানও গুনতে হবে।
দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে টি বাঁধ থেকে দক্ষিণ ওয়ারী পর্যন্ত প্রায় দুই কিঃ মিঃ অবদা বাঁধ ও ডানতীর রক্ষা প্রকল্প ভাঙনে বিলীন হতে পারে স্বীকার করে রানীগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, কাঁচকোল বাঁধ এলাকার নদীর গভীরতা বেড়ে যাওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
বাঁধ ও ডানতীর রক্ষা প্রকল্প হুমকির মুখে তা স্বীকার করে চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রুকুনুজ্জামান শাহিন বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে ইনশাআল্লাহ।
পানি উন্নয়ন বোর্ড কুড়িগ্রাম নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ রাকিবুল হাসান বলেন, কাজে কোনো অনিয়ম নেই। এছাড়াও জিও ব্যাগ ডাম্পিং কাজের জন্য দ্রুত ঠিকাদার নিয়োগ করা হবে, আশা করি সমস্যা হবে না।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/মে/১২/২৪