।। নিউজ ডেস্ক ।।
জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি কার্ড) নাম বিভ্রাট নিয়ে বিপাকে পড়েছে ভূরুঙ্গামারীর এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। নির্বাচন অফিসে নাম সংশোধনের জন্য আবেদন জানালেও অজ্ঞাত কারণে দীর্ঘদিনেও তা সংশোধন না করায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধাসহ তার পরিবার।
ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের আঙ্গারীয়া গ্রামের এই বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম শ্রী তরনী কান্ত রায়। স্থানীয়ভাবে তার ডাক নাম ললিত। পিতার নাম মহেন্দ্র কান্ত রায়। ভারতীয় মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় তার নম্বর হচ্ছে- ৪০৪৯৩, বাংলাদেশ বেসামরিক গেজেটে তার নং ১১৮৫ এবং লাল মুক্তি বার্তায় তার নং ৩১৬০৪০৫৪৯। এ সকল তালিকায় তার নাম রয়েছে তরনী কান্ত রায়। শুধু তাই নয়, তার জন্ম নিবন্ধন এবং ১৯৭২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অকৃতকার্য এই বীর মুক্তিযোদ্ধার টেবুলেশন শীটে (নম্বর পত্রে) নাম রয়েছে তরনী কান্ত রায়।
জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্রে তরনী কান্ত কর এর পরিবর্তে ভুল বশত ডাক নাম ললিত বর্মণ অর্ন্তভুক্ত হয়। প্রথম দিকে জাতীয় পরিচয়পত্রের গুরত্ব অনুধাবন করতে না পারলেও পরবর্তীতে জাতীয় পরিচয়পত্রে এই নামের বিভ্রাট নিয়ে বিপাকে পড়লে তিনি সকল প্রমাণপত্র, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার, ইউপি চেয়ারম্যান ও প্রধান শিক্ষকের প্রত্যয়ন পত্রসহ নির্বাচন অফিসে নাম সংশোধনের আবেদন (ক্রমিক নং এনআইডিসিএ ১১৮৪৮৩৫১) জানালেও দীর্ঘ দুই বছরেও তা সংশোধন না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে মুক্তিযোদ্ধাসহ তার পরিবারের স্বজনরা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা তরনী কান্ত রায় বলেন, আমি গৃহ ঋণের জন্য আবেদন করেছি কিন্তু নাম বিভ্রাটের কারণে গৃহ ঋণ পাচ্ছি না। শুধু তাই নয়, নাম বিভ্রাটের কারণে আমি অন্যকোনো সুবিধাও পাচ্ছি না। তিন ছেলে, ছেলের বউ, নাতি-নাতনি এবং স্ত্রীকে নিয়ে দুঃচিন্তায় রয়েছি।
তার স্ত্রী শ্রী জয়ন্তী রানী জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রে নাম সংশোধন করতে না পারায় লোকটা চিন্তায় চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করে না। সবসময় দুঃচিন্তা করে। তার কিছু হয়ে গেলে আমাদের কী হবে? প্রতিবেশী শংকর বিশ্বাস (৫০), আয়নাল হক (৬০) ও বিসাদী বর্মণ (৪৫) জানান, তরনী কান্তের ডাকনাম ললিত। তরনী কান্ত ও ললিত একি ব্যক্তি।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সদ্য সাবেক কমান্ডার মহি উদ্দিন আহমেদ জানান, তিনি একজন প্রকৃত ফ্রিডম ফাইটার (এফএফ)। ৬নং সেক্টরের অধীনে ঠাকুরগাঁওয়ে সে যুদ্ধ করেছে। তিনি জানান, ভুল বশত জাতীয় পরিচয়পত্রে তার ডাক নাম ললিত বর্মণ হয়েছে। এটা সংশোধনের জন্য আমি প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছি।
উপজেলা নির্বাচন অফিসার সাইফ আহমেদ নাসিম মোবাইল ফোনে জানান, উপজেলা নির্বাচনের ডিউটিতে অন্য উপজেলায় রয়েছি। আমি নতুন যোগদান করেছি। এব্যাপারে কিছুই বলতে পারছি না। পরে দেখে জানাবো।
তবে নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, পুরো নাম সংশোধনের বিষয়টি তাদের এখতিয়ারে নেই। এটা জাতীয় নির্বাচন অফিস থেকে করা হয়ে থাকে।
ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, এব্যাপারে আমাকে কেউ অবগত করেনি। অবগত করলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।