।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম বালাতারী গ্রামে শ্মশান ও দশহারা মেলার জন্য হিন্দু সাধারণের ব্যবহার্য জমি উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (২১ এপ্রিল) বিকালে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার (বদর) ও স্থানীয় সর্বসাধারণের দিনব্যাপী প্রচেষ্টায় ৬৬ শতক জমির সীমানা বের করা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, স্থানীয় নিমাই চন্দ্র শীল, ভারত চন্দ্র বর্মন, লাল বাহাদুর রায়, আনিছুর রহমান বাবু, এনামুল হক খন্দকারসহ কয়েকজন মিলে স্বাধীনতা পূর্ববর্তী সময়ে বিলীন হওয়া শ্মশান ও দশহারা মেলার জন্য হিন্দু সাধারণের ব্যবহার্য ওই জমি উদ্ধারের উদ্যোগ গ্রহণ করে। আজ স্থানীয় লোকজনসহ উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার (বদর) এর সার্বিক সহযোগিতায় জমি পরিমাপ করে সীমানা নির্ধারণ করে।
উদ্যোগ গ্রহণকারীগণ জানান, স্বাধীনতার পর থেকে শ্মশান ও দশহারা মেলার জন্য হিন্দু সাধারণের ব্যবহার্য ওই জমি পরিত্যক্ত ও বেদখল অবস্থায় ছিল। স্থানীয় সকলে অবগত থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে সুষ্ঠু তদারকি না থাকায় মেলা বন্ধ হয়ে যায়। ধীরে ধীরে জমিও বেদখলে চলে যায়। স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের সচেতন মহল অতীত ইতিহাসকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়ে এ জমি উদ্ধার করা হলো।
বালাতাড়ি ওয়ার্ডের ইউপ সদস্য মহির উদ্দিন ও স্থানীয় আনিছুর রহমান বাবু বলেন, শ্মশানের জন্য নির্ধারিত জায়গা থাকার পরও বেদখলে থাকায় এখানকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মরদেহ সৎকারে নানাবিধ সমস্যা পোহাতে হতো। যথেষ্ট পরিমাণ জমি থেকেও যাতায়াত ও মরদেহ দাহ করতে গিয়ে নানান সংকট দেখা দিতো তাদের। এখন সেই সমস্যাটা দূর হলো। আমরা আশাকরি এখন থেকে তাদেরকে যত্রতত্র মরদেহ দাহ করতে হবে না।
উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার (বদর) আব্দুল আউয়াল বলেন, উপজেলা ভুমি অফিসে আবেদনের প্রেক্ষিতে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয়ের নির্দেশে এসেছি। স্থানীয়দের সহযোগিতায় দিনব্যাপী সার্ভে করে জমি পরিমাপ ও সীমানা নির্ধারণ করা হলো। যা সঠিক এবং সকলের কাছে সন্তোষজনক হয়েছে।
ফুলবাড়ী উপজেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অনীল চন্দ্র রায় জানান, আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন জমি উদ্ধারের জন্য উপজেলা ভুমি অফিসে আবেদন করেছেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার (বদর) আব্দুল আউয়ালসহ সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য মহির উদ্দিন ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অত্যন্ত সুন্দর পরিবেশে দীর্ঘদিন পর শ্মশানের জন্য নির্ধারিত জমি উদ্ধার হয়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবান জানাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, এখন নির্ধারিত স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো মানুষ মারা গেলে তার মরদেহ সেখানে সৎকার করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ সময় স্থানীয় ইউপি সদস্য মহির উদ্দিন, সাবেক ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম, পার্শ্ববর্তী ওয়ার্ডের সদস্য শ্যামল চন্দ্র মন্ডল, সাবেক ইউপি সদস্য যতীন্দ্রনাথ বর্মণ, পল্লী চিকিৎসক নির্মল চন্দ্র রায়, আব্দুল কুদ্দুস, কাসেদ আলীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
//নিউজ/ফুলবাড়ী//নূর-নবী/এপ্রিল/২১/২৪