।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
লাখো লাখো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পদভারে মুখরিত ছিল ব্রহ্মপুত্র তীর। ব্রহ্মপুত্রে স্নানের মাধ্যমে শেষ হলো অষ্টমীর স্নান। নির্দিষ্ট ঘাট না থাকায় স্নানে আসা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝে ক্ষোভ। চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) ভোর থেকে ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অষ্টমী স্নান শুরু হয়েছিল।
সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ভোর ৪টা ২০ মিনিট থেকে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা ৫৬ মিনিট অষ্টমী প্রহর ও স্নানের সময়। এবারে প্রায় ৫ লক্ষ পুণ্যার্থীর পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছিল চিলমারীর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ের প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকা। হে মহা ভাগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য, তুমি আমার পাপ হরণ করো। মন্ত্র উচ্চারণ করে পুণ্যার্থীরা কৃপা চান ব্রহ্মার। স্নান উৎসবে মেতে উঠেন পুণ্যার্থীরা। গত কয়েকদিন থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার পুণ্যার্থীরা ভিড় জমান চিলমারী বন্দর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে। সড়ক পথে বাস, মাইক্রোবাস, প্রাইভেট কার, অটোতে ও মোটরগাড়ি করে। নদী পথে ট্রলার ও নৌকাযোগে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে পুণ্যার্থীরা সমবেত হন চিলমারী বন্দর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে।
উৎসব কমিটির নেতারা বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও ভারতসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বিপুলসংখ্যক পুণ্যার্থী যোগ দিয়েছেন স্নান উৎসবে। কোনো নিদিষ্ট ঘাট না থাকায় উন্মুক্ত স্নানঘাটের মাধ্যমে পুণ্যার্থীরা স্নানপর্ব সম্পন্ন করেছেন। স্নান ও মেলা উপলক্ষে রমনা ব্যঙ মারা ঘাট, জোড়গাছ থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বালুচর এলাকায় বসেছে সার্কাস ও ভাওয়াইয়া গানের আসর। বাঁশির সুর, ঢোলের শব্দ ও নারী-পুরুষের পদচারণায় মুখরিত ছিল চরাঞ্চল। স্নান উৎসবকে কেন্দ্র করে সোমবার (১৫ এপ্রিল) থেকে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী লোকজ মেলা।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিনহাজুল ইসলাম জানান, পুণ্যার্থীদের কল্যাণে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ঘাটের পাশেই নারীদের কাপড় বদলানোর জন্য বুথের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। টিউবওয়েল স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় বেশকিছু ধর্মীয় সামাজিক ও সেবামূলক সংঘঠন ক্যাম্প খোলা হয়েছে। এছাড়াও নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশি পাহাড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কথা হয় স্নান দিতে আসা পুজা, সোহেলী, শ্যামল কুমার, বুদ্ধবেদ চক্রবত্তিসহ অনেকের সাথে তারা অভিযোগ করে বলেন, গোসলের জন্য নিদিষ্ট কোন ঘাট না থাকায় কিছুটা সমস্যাও হচ্ছে।
উৎসব কমিটির সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছরের মত এবারও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকেও পুণ্যার্থীরা অষ্টমী স্নান মেলায় এসছে। এবার ৫ লাখেরও বেশি পুণ্যার্থীর সমাগম হয়েছে বলে আশা করা হচ্ছে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/এপ্রিল/১৬/২৪