।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চিলমারীতে কর্মকর্তার গাফিলতিতে সময় মতো ভাতা না পেয়ে ভোগান্তিসহ হয়রানির স্বীকার বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভোগীরা। দিনের পর দিন সময় কাটছে অফিসের মাঠে ও বারান্দায়। চিলমারীতে আসন্ন ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন প্রায় শতাধিক বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভোগী। স্ব স্ব মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ৩ মাসের স্থলে ১ মাসের ভাতা পাওয়া এবং ভাতার টাকা না পাওয়ায় সমাজসেবা দপ্তরের সামনে দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে দেখা গেছে ভুক্তভোগীদের। কর্মকর্তার অবহেলায় ভোগান্তিসহ ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ।
জানা গেছে, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় উপজেলা সমাজসেবা দপ্তরে বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী, প্রতিবন্ধী শিক্ষা ও হরিজন মিলে প্রায় ১৬ হাজার ভাতাভোগী নিয়মিত ভাতা পেয়ে আসছেন। বয়স্ক ভাতা মাসিক ৬০০ টাকা, বিধবা ভাতা মাসিক ৫৫০ টাকা ও প্রতিবন্ধী ভাতা মাসিক ৮৫০ টাকা হারে প্রতি ৩ মাস অন্তর সুবিধাভোগীদের নিজ নামীয় বিকাশ নম্বরে প্রদান করা হয় এসব টাকা। নিয়মানুযায়ী উপজেলা সমাজসেবা অফিসার ত্রয়মাসিক ভিত্তিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরে সুবিধাভোগীদের পে-রোল প্রেরণ করেন। সেখান থেকে অর্থ মন্ত্রণালয় হয়ে বিকাশ, তারপর সুবিধাভোগীদের স্ব স্ব বিকাশ নম্বরে ভাতার টাকা চলে যায়। অধিদপ্তর থেকে জানুয়ারি-মার্চ ২০২৪, ৩ মাসের ভাতার টাকা ছাড় করা হলেও অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা উপজেলা সমাজসেবা অফিসার নাজমুল হাসানের অবহেলায় অনেকে ১ মাসের টাকা পাওয়া এবং অনেকের হিসেবে ভাতা না পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় সুবিধাভোগী বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভোগী শতাধিক সিটিজেন ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ করেছেন।
গত কয়েকদিন থেকে বেশকিছু সুবিধাভোগীকে সমাজসেবা দপ্তরের সামনে গাছ তলায় ও বারান্দায় বসে থাকতে দেখা গেছে। এ সময় দুর্গম চরাঞ্চল উপজেলার অষ্টমীর চর ইউনিয়নের ডাটিয়ারচর এলাকার ভাতাভোগী পারুল, মিলিকজান, রুপভান বেওয়া, আনোয়ারা, পারুলসহ অনেকে জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে ভাতা পাচ্ছেন না। মোজাম্মেল হকসহ কয়েকজন জানান, তারা ৩ মাসের ১ হাজার ৮০০ টাকা পাওয়ার কথা কিন্তু পেয়েছেন ১ মাসের ৬০০ টাকা।
তাদের অভিযোগ, বর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা যোগদান করার পর থেকে ভাতার টাকা প্রদানে বিভিন্ন অনিয়ম হচ্ছে। রবিবার দীর্ঘ সময় দপ্তরের সামনে থেকে কর্মকর্তার সাক্ষাত না পেয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের শরণাপন্ন হন ওই ভাতাভোগীরা। পরে কর্মকর্তার সাথে কথা বলে তাদের বিদায় করেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। পরের দিন আসলেও কোনো সুরাহা পাননি ভাতাভোগীরা।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার (অ.দা.) মোঃ নাজমুল হাসান বলেন, জানুয়ারি-মার্চ চক্রের ভাতার টাকা ছাড় করা হয়েছে। সবার টাকাতো এক সঙ্গে আসবে না। পর্যায়ক্রমে সবাই টাকা পাবেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মিনহাজুল ইসলাম বলেন, আমি জরুরী মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলাম, বিষয়টি আমার জানা নেই। সমাজসেবা অফিসারের সাথে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ রুকুনুজ্জামান শাহীন বলেন, বেশকিছু বয়স্ক নারী-পুরুষ ভাতার টাকা না পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। সমাজসেবা অফিসারকে ব্যবস্থা নিতে বলে তাদের বিদায় করেছি।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/এপ্রিল/০২/২৪