।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
আলেয়া অনেক দিন আগে হারিয়েছেন স্বামীকে। কষ্ট করে দুই মেয়েকে বিয়ে দিলেও যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে দুই মেয়ে তাদের সন্তানদের নিয়ে এখন মায়ের উপর ভরসা। অন্যের বাড়িতে কাজ করে ৭ জনের মুখে খাবার তুলে দিতে হয় তাকে। সারা বছর কষ্ট করে আসলেও রমজানের রোজা তো ছাড়তে পারেনা। সাহরিতে শাক বা ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়ে কষ্ট করে রোজা রাখলেও প্রায় দিন সংসারের সদস্যদের নিয়ে পান্তা ভাত দিয়ে ইফতার করতে হচ্ছে তাকে। আলেয়ার বসবাস উপজেলার রমনা ইউনিয়নের সাতঘড়ি পাড়ায়। একই এলাকার আনায়ারা প্রায় সময় ইফতার সেরে নেন চালের নাস্তা দিয়ে। এ রকম অনেক আলেয়া আর আনোয়ারা আছে যাদের ভাগ্যে সাহরিতে জোটেনা ভালো খাবার, ইফতারে সামনে থাকে না সুস্বাদু খাবার।
জানা গেছে, সারা বছরেরই যারা অন্যের উপর নির্ভর করে। কাজ করলে খাবার জোটে না করলে হয়তো উপোসে থাকতে হয়। এমন মানুষগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে চারপাশে। রমজান এলে এরা খুশি হলেও খাবারের কষ্ট তাদের ব্যথিত করে। সাহরিতে শাক, ডাল, ভর্তা ভাত জুটলেও ইফতার হয় পান্তা বা সাদা মুড়ি দিয়ে। রমজান শেষের দিকে চলে আসলেও এখনো অনেক পরিবারের ভাগ্যে ইফতারে জোটেনি খেজুর, ফল-ফলাদি, ছোলা, পিঁয়াজু, বেগুনিসহ বিভিন্ন মুখরোচক বা সুস্বাদু খাবার।
কথা হলে চিলমারীর রমনা ইউনিয়নের সাতঘড়ি পাড়া এলাকার আলেয়া বলেন, স্বামীকে হারিয়েছেন কয়েক বছর, দুই মেয়েকে বিয়ে দিলেও তাদের স্বামীরা খোঁজ-খবর না রাখায় মেয়েরাও তাদের সন্তানদের নিয়ে তার উপর ভরসায় আছেন। এখন ৭ জনের দায়িত্ব তার উপর। সারদিন অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পান তা দিয়েই দিন পার করেন। রমজান শুরু হওয়ার পর থেকে রোজা রেখে আগের মতো কাজ করতেও পারেন না। এরপরেও কষ্ট করে কাজ করে যাচ্ছেন সন্তান ও নাতিদের মুখে ভাত তুলে দেয়ার জন্য। সাহরিতে ভাত খেলেও বাকি ভাতে পানি দিয়ে রাখেন এবং সেটি দিয়ে ইফতার সারেন বেশির ভাগ সময়।
একই এলাকার আনেয়ারা ঝুপরি ঘরে বসবাস ইফতারে জোটে চালের নাস্তা। রমনা বাঁধে বসবাস সুফিয়া ও জেলেখার এখনো তাদের বাস করতে হচ্ছে বাঁধে, ইফতার করছে তারা সাদা মুড়ি দিয়ে। এ রকম শুধু আলেয়া, আনোয়ারা নয় শতশত পরিবার রয়েছে সাহরি কিংবা ইফতারে জোটেনা ভালো বা সুস্বাদু খাবার।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/মার্চ/৩০/২৪