।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চিলমারীতে পল্লী বিদ্যুতের ভুতুড়ে বিলে হয়রানি হচ্ছে গ্রাহক। সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রতিবাদ করলেই মামলার ভয়সহ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দিচ্ছেন কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিলমারী জোনাল অফিস।
গ্রাহকদের অভিযোগে জানা যায়, কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিলমারী জোনাল অফিসের আওতায় রাজারঘাট তবকপুর গ্রামের গ্রাহক মোঃ আশরাফুল ইসলামের হিসাব নং- ১০৫০০৭৩৮৫১৬৬৫, বই নং- ৩৮৫/১৬৬৫ এর মার্চ, এপ্রিল, মে/২৩ মাসের বিল- ২৭৬ টাকা, মে মাসের বিল- ১২৬৮ টাকা, জুন মাসের বিল- ৩৪৩ টাকা, আগস্ট মাসের বিল- ৭০৫ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসের বিল- ৮১৪ টাকা, অক্টোবর-নভেম্বর মাসের বিল- ১৪২৩ টাকা এবং ডিসেম্বর/২৩ মাসের বিল- ১৭৬ টাকা। কিন্তু জানুয়ারি মাসে ঐ গ্রাহকের বিল করা হয় ৩৮ হাজার ৭২৩ টাকা। যা দুই মাসে পরিশোধের জন্য ১৯ হাজার ৩৬৩ টাকা করে ২টি বিল করা হয়। এদিকে মুরগির ফার্মের মালিকদের জরিমানা করা হয় ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু বিভিন্ন জন গ্রাহকের বিভিন্ন অংকের টাকা।
উপজেলার মাচাবান্দা নামাচর গ্রামের গ্রাহক এস এম নাজমুল আলমের নামীয় সংযোগের ১০১৪ সাল থেকে ২০২৩ সালের জুন মাসের বিল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তার সর্বোচ্চ বিলের পরিমাণ ৫৮৮ টাকা। কিন্তু ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ৫ হাজার ৮৮ টাকা বিল করা হয়। বিষয়টি নিয়ে উক্ত গ্রাহক লিখিত অভিযোগ করলে নামমাত্র পরিদর্শন টিম করেন কুড়িলা পবিস। উক্ত টিমের রিপোর্ট অনুযায়ী বিল সঠিক আছে মর্মে গ্রাহককে বিল পরিশোধের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন।
এস, এম নুরুল আমিন সরকারের ভাড়া বাসায় মাত্রাতিরিক্ত বিলের জন্য ডিজিএম বরাবর লিখিত অভিযোগ করলে তাকে লিখিতভাবে কিংবা মৌখিকভাবে কোন কিছু না জানিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে ডিজিএমকে জানালে তিনি বিকেলে পুনঃসংযোগ দেন এবং ঐ মাসের বিদ্যুৎ বিলের সাথে পুনঃসংযোগ ফি বাবদ ৬৯০ টাকা বাধ্যতামূলক জমা দিতে হয় গ্রাহককে।
চিলমারী জোনাল অফিসের আওতায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লখিয়ার পাড়া গ্রামের মোঃ শেখ ফরিদের হিসাব নং- ০১/৭৮৮/১৮৩৫। তিনি এপ্রিল/২০২৩ মাসের বিল পরিশোধ করে ১৭/০৫/২০২৩ তারিখে, কিন্তু ২৮/০৫/২০২৩ তারিখে বকেয়া বিলের কারণে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। ৩১/০৫/২০২৩ তারিখে মে মাসের বিল পরিশোধ করেন। বকেয়া বিল দেখান ১০২৪ টাকা। মে মাসের বিলের কপি গ্রাহক হাতে পায় জুন মাসে তাতে বিল ছিল ৩১৯ টাকা। এ বিষয়ে উক্ত গ্রাহক জানান, বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ করা হয়। চিলমারী জোনাল অফিসটি এখন নানা অনিয়ম দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে এবং নতুন সংযোগ নিতে গ্রাহককে চরম হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
এটি একটি সমিতি হওয়া সত্ত্বেও সকল গ্রাহকগণ সমান সুবিধা ভোগ করতে পারছেন না। হরিপুর এলাকার গ্রাহক গাজী মামুদের হিসাব নং- ১০৫০০৭৭৪৪৯১৩৭। তিনি জানান, তার সেচ পাম্প বন্ধ থাকার পরেও প্রতিমাসে বিল দিতে হয়। বিলের কপিও সময়মতো তার হাতে পৌঁছায় না। গ্রামের কতিপয় মানুষের হাতে পুরো গ্রামের মানুষের বিলের কপি দিয়ে দেয়। পরের মাসে জরিমানাসহ বিল দিতে হয়। গত বছর তার জরিমানা করেন ১ লক্ষ ৫ হাজার টাকা। পরে স্থানীয়ভাবে কথা বলে ৫৩ হাজার টাকা প্রদান করে সংযোগ নিতে হয় তাকে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম-লালমনিরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির চিলমারী জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মোঃ মোস্তফা কামালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখব।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/ফেব্রুয়ারি/০৪/২৪