।। নিউজ ডেস্ক ।।
কুড়িগ্রামে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলায় আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম ওরফে মসলা শহিদুল নামে কথিত দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) রাতে কুড়িগ্রাম পৌর শহরের তালতলা রোডের গাছবাড়ি সংলগ্ন কৃষ্ণপুর কামারপাড়া ও মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ফারাজীপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত কুড়িগ্রাম পৌর শহরের গাছবাড়ি সংলগ্ন কৃষ্ণপুর কামারপাড়ার মৃত করিমুল্লা (জোগলা)’র পুত্র শহিদুল ইসলাম ওরফে মসলা শহিদুল এক সময় কুড়িগ্রাম আদর্শ পৌর বাজারে খুচরা মসলার ব্যবসা করতেন আর মোগলবাসা ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর ফারাজীপাড়া গ্রামের জয়লাল আবেদীনের পুত্র আলমগীর হোসেন জেলা শহরের জর্জকোর্ট মোড়ে ফটোকপির ব্যবসা করতেন।
পুলিশ অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২২ জানুয়ারি) সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের রতনপল্লী এলাকায় ধরলা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ চলাকালীন সময় কথিত ওই দুই সাংবাদিক উপস্থিত হন। সেখানে এস কে এমদাদুল হক আল মামুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাব ঠিকাদার জাহিদুল ইসলামের নিকট এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং চলমান কাজ বন্ধ করে দেয়। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আটককৃত দুই সাংবাদিক সাব ঠিকাদার জাহিদুল ইসলামের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে মারধর করে তার কাছে থাকা লেবার হাজিরার ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
এ ঘটনায় জাহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলামকে আসামী করে সদর থানায় ছিনতাই ও চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে। পুলিশ বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে ওই দুই সাংবাদিককে গ্রেফতার করে সকালে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মামলার ২ নম্বর আসামী শহিদুল ইসলাম কুড়িগ্রাম আদর্শ পৌরবাজারে খোলা দোকানে মসলা বিক্রি করতেন। শহিদুল ইসলামের লেখাপড়া না থাকলেও পরে হঠাৎ করেই তিনি বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয় দিতে শুরু করেন এবং বিভিন্ন উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ঝামেলাযুক্ত জায়গায় গিয়ে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা আদায় করে আসছিলেন।
অন্যদিকে ১ নম্বর আসামী আলমগীর হোসেন আগে জর্জকোটের বাইরে রাস্তার পাশে কম্পিউটারে প্রিন্ট ও ফটোকপির ব্যবসা করতেন। পরে সেও সাংবাদিক পরিচয়ে শহিদুল ইসলামের সাথে একই কায়দায় বিভিন্ন এলাকার মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাদা আদায় করতেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদী জাহিদুল ইসলাম জানান, ২২ জানুয়ারি (সোমবার) দুপুর দেড়টার দিকে আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম মোগলবাসা ইউনিয়নের রতনপল্লী এলাকায় এসে সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন অজুহাতে ধরলা নদীর তীর রক্ষা বাঁধের চলমান কাজ বন্ধ করে দেয়। সে সময় কাজ বন্ধ করার কারণ জানতে চাইলে তারা দুজনে আমার নিকট এক লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে এবং টাকা দেয়ার পর কাজ করতে বলে। আমি টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে আলমগীর হোসেন ও শহিদুল ইসলাম অতর্কিত আমার উপর হামলা করে আমার কাছে থাকা শ্রমিকদের মজুরির ৮০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় কাজে নিয়োজিত থাকা শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে তারা আমাকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাছুদুর রহমান জানান, মামলার ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।