।। নিউজ ডেস্ক ।।
নদীর বাঁধ ধরে হেটে যেতেই পাশে এসে বলতে লাগলেন ‘নৌকাত ঘুরবেন বাহে’। পরনে পাতলা একটি শার্ট, লুঙ্গি ও গলায় মাফলার পেঁচানো থাকলেও পা দুটো রয়েছে খালি। কনকনে ঠান্ডায় খালি পায়ে আছেন কষ্ট হয় না, হেসে উত্তর দিলেন ‘গরিবের কষ্ট হইলেও সহ্য করি থাকা নাগে’ নিজের সম্পর্কে বলছিলেন ভানু চন্দ্র দাস। তিনি পেশায় একজন মাঝি।
কুড়িগ্রাম সদরের শুলকুর বাজার এলাকায় স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে সংসার ভানু দাসের। ধরলা ব্রিজ এলাকায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের নৌকায় ঘুরিয়ে যা আয় হয় তাই দিয়ে চলে চার জনের সংসার। বছরের অন্যান্য সময় মাছ ধরে আয় ভালো হলেও শীত আসলেই কমে যায় আয়ের উৎস। তখন শুধু নৌকায় লোক উঠিয়েই চালাতে হয় সংসার। দুই মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করালেও দিতে পারেন না পড়াশোনার খরচ।
অন্য কোন পেশার সঙ্গে যুক্ত না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে নৌকা চালায় মাছ ধরছি, ধান চাষ, মাটি কাটা বা অন্য কোন কাজ শিখি নাই, তাই করবারও পাইনা।
ভানু চন্দ্র দাসের মতো আরও অনেক মাঝি আছেন যারা প্রতিনিয়ত সংগ্রাম করে যাচ্ছেন তাদের পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে। জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন নৌকা ভাসালেও এখন আর তেমন টাকা রোজগার হয় না। বছরের কিছু সময় ভালো গেলেও বাকিটা সময় যায় কষ্টে ও অর্ধাহারে। এরপরেও ধরলার বুকে নৌকা চালিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেন তারা।