।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
স্বাস্থ্যের সমস্যাগুলির মধ্যে বহুল পরিচিত একটি সমস্যা হলো ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া। সাধারণত অস্বাস্থ্যকর, পচা, বাসি, জীবাণুযুক্ত খাবার ও পানীয় পানের কারণে ফুড পয়জনিং হওয়ার সম্ভাবনা সর্বাধিক থাকে। এছাড়া বাইরের বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ফলে কোনো ক্ষতিকর জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া পেটে প্রবেশ করে এ সমস্যা হতে দেখা যায়। ফুড পয়জনিংয়ের সমস্যাটি প্রবীণ ও শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী পর্যন্তও হতে পারে। ধারণা করা হয়, বাংলাদেশে ১৮ শতাংশ শিশু মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে বিষক্রিয়াজনিত খাবার গ্রহণের কারণেই।
ফুড পয়জনিংয়ের সমস্যা নিয়ে ঢাকা হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট হাসপাতালের রেজিস্ট্রার শিশুরোগ বিভাগের ডা. এ টি এম রফিক উজ্জ্বল সম্যক পরামর্শ দিয়েছেনঃ-
ফুড পয়জনিংয়ের লক্ষণ
ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণের লক্ষণগুলো মোটামুটি একই রকমের, যেমন- ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা, পেটে ব্যথা, ক্ষুধামান্দ্য, বমি, ক্লান্তি, মাথাব্যথা এবং অনেক ক্ষেত্রে জ্বর বোধ হওয়া পয়জনিংয়ের লক্ষণ। সাধারণত বাসি, পচা ও দূষিত খাবার খাওয়ার ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে রোগীদের এ লক্ষণগুলো অনুভূত হয়।
চিকিৎসা
ফুড পয়জনিং রোগীর যদি পাতলা পায়খানা বা বমি হতে দেখা যায়, তাহলে উক্ত রোগীকে খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। এছাড়া ফুড পয়জনিংয়ে আক্রান্ত রোগীর অবস্থা বুঝে জীবাণুনাশক বা অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ সেবনের পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা। অ্যান্টিবায়োটিক ফুড পয়জনিংয়ের সমস্যায় ভালো কাজ করে। তবে রোগীর জ্বর থাকলে প্যারাসিটামল খাওয়ানো যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অ্যান্টিস্পাসমোডিক বা ব্যথানিরোধক ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে কোনো কারণে ফুড পয়জনিংয়ের আকার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে তাৎক্ষণিক রোগীকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে এবং পরামর্শ নিতে হবে।
ফুড পয়জনিংয়ের ভেষজ চিকিৎসাঃ-
★ ফুড পয়জনিংয়ে আক্রান্ত রোগীদের হজমশক্তি বাড়াতে ও পেটব্যথা কমাতে প্রতিদিন কুঁচি আদার সঙ্গে কয়েক ফোঁটা মধু খেতে হবে।
★ জিরাগুঁড়ো পেট খারাপ ও পেটব্যথার মতো সমস্যা দূর করতে খুবই কার্যকরী। তাই খাদ্যে বিষক্রিয়ায় জিরাগুঁড়ো খাওয়া ভালো।
★ তুলসীপাতা ফুড পয়জনিং রোগীদের অনেক উপকার করে। তুলসীপাতা থেঁতো করে সাথে মধু মিশিয়ে খেলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুফল পাওয়া যাবে।
★ কলাতে থাকা পটাশিয়াম ফুড পয়জনিং কমাতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত কলা খাওয়া প্রয়োজন।
★ ফুড পয়জনিংয়ে লেবুর রস করে খাওয়া দরকার। কেননা যেসব ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ফুড পয়জনিং হয়, তা লেবুর রসের অ্যাসিডিটিতে নষ্ট হয়। তাই লেবু খাওয়া উপকারী।
★ ফুড পয়জনিংয়ে আক্রান্ত রোগীদের বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।