।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
অভাব অনটনের সংসারে স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে কোনো রকম দিনাতিপাত করছিলেন হতদরিদ্র শফিকুল ইসলাম (৩৫)। তার অসহায়ত্বের খবর পেয়ে যৌথভাবে পাশে দাঁড়ালেন উপজেলা প্রশাসন ও পৌর মেয়র।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউর রহমান, পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু, উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মর্তুজা শফিকুলের বাড়িতে যান। এ সময় তাকে ৩০ কেজি চাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি ডাল, ২ কেজি আলু, ১ কেজি পেঁয়াজ, মরিচ, সাবানসহ নগদ তিন হাজার টাকা প্রদান করা হয়।
শফিকুলে বাড়ি উলিপুর পৌরসভার পশ্চিম নাওডাঙ্গা মাঝিরভিটা এলাকায়। স্ত্রী আছিমা বেগমসহ দুই সন্তান আশিক (১০) ও আলিফ (৩) কে নিয়ে সংসার তার। শফিকুলের দৈন্যতার কারণে বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সদ্য ভূমিষ্ঠ একটি কন্যা সন্তানকে দত্তক দেন তিনি।
শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, নিজের জায়গাজমি কিছুই নেই। অন্যের ২ শতক জমিতে কোনোরকমভাবে টিনের চালা তৈরি করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাস করছি। শারীরিক অবস্থা বেশি ভালো নেই বেশিরভাগ সময় অসুস্থ থাকায় আয়রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে। বড় ছেলে আশিক একটি মাদরাসায় পড়ে হুজুরেরা সেখানে সব ফ্রি করে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দুই ছেলেকে লালন পালন করতে পারছিলাম না। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার আমার স্ত্রী একটি কন্যা সন্তান জন্ম দেয়। পরে দূর সম্পর্কের এক নিঃসন্তান আত্মীয় আমার সদ্যভূমিষ্ট কন্যার লালন পালনের দায়িত্ব নেন। আমার সমস্যার কথা শুনে স্যারেরা আসছিলেন। অনেক সাহায্য করে গেছেন। এতে আমার খুব উপকার হয়েছে।
কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা জানান, শফিকুল খুবই অসহায়। কয়েক মাস আগে প্যারালাইসিস হওয়ার কারণে আয়রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। খবর পেয়ে ইউএনও, মেয়র এবং থানার ওসি স্যার আসছিলেন। তারা অনেক সাহায্য করে গেছেন। এ সময় শফিকুলের স্থায়ী বন্দোবস্তর দাবি জানান তারা।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র মামুন সরকার মিঠু বলেন, পরিবারটি খুব অসহায়। পৌরসভার পক্ষ থেকে তাকে স্বাভলম্বী করার জন্য আশ্রয়ণের পাশেই মুদির ব্যবসা ধরিয়ে দেয়ার পরিকল্পা নেওয়া হয়েছে।
উলিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আতাউর রহমান বলেন, যেহেতু শফিকুল ভূমি ও গৃহহীন, তাই তাকে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বসবাসের জন্য একটি আশ্রয়ণের ঘরের বরাদ্দ দেওয়া হবে।
//নিউজ//উলিপুর//মালেক/জানুয়ারি/০১/২৪