।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
চলতি শুষ্ক মৌসুমে এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে নাব্যতা সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে ভারী যান পারাপার কমে যাচ্ছে। ফেরিগুলো ধারণক্ষমতার চেয়ে হালকা ও কম যানবাহন নিয়ে পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছে। রুটটির অনেক স্থান সরু হয়ে ওয়ান ওয়ে হয়ে পড়েছে। ফলে একদিক থেকে একটি ছাড়লে অপরদিক থেকে আর একটি ছাড়লে অবস্থান নিয়ে জটিলতাও পড়ছে। এ অবস্থায় দ্রুত ড্রেজিং কার্যক্রম বাড়ানোর তাগাদা দিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
সরেজমিন ও বিআইডাব্লিউটিসিসহ একাধিক সূত্রে জানা যায়, উদ্বোধনের পর থেকেই চিলমারী-রৌমারী নৌপথটির চাহিদা বেড়ে যায়, বাড়তে থাকে রাজস্ব আয় ও বেড়ে যায় গুরুত্ব। গুরুত্বপূর্ণ নৌরুট চিলমারী-রৌমারী ফেরি, নৌকা, স্পিডবোটসহ বিভিন্ন নৌযানে উত্তরাঞ্চলের কুড়িগ্রাম লালমনিরহাটসহ কয়েকটি জেলার পণ্যবাহী গাড়িসহ শতশত মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। উদ্বোধনের পর এই প্রথম বারের মতো শুষ্ক মৌসুমের শুরু থেকেই ব্রহ্মপুত্রের পানি কমে নাব্যতা সংকট দেখা দেয়। সেক্ষেত্রে এ বছর বিভিন্ন স্থানে ডুবোচর, চর জেগে উঠাসহ চ্যানেল সরু হয়ে অনেক স্থানেই ওয়ান ওয়ে হয়ে পড়েছে। তাতে সামান্য ঘন কুয়াশা পড়তেই রুটটির ফেরিসহ নৌচলাচল দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকছে। ফলে ঘাট এলাকায় দেখা দিচ্ছে তীব্র যানজট বাড়ছে ভোগান্তি। এছাড়াও যানজটের কবলে পড়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছে স্থানীয়রাসহ আগতরা।
নাব্যতা সংকট ও সঠিক মাকিং না থাকায় রাতে চলাচল বন্ধ থাকায় দিনের পর দিন পারাপারের অপেক্ষা করতে হচ্ছে পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে। এদিকে ড্রেজার ড্রেজিং চালালেও অনিয়ম, দুর্নীতি এবং সঠিক পদক্ষেপ না থাকায় ওই নৌরুটের নাব্যতা ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয়রা। এতে প্রকট আকার নিচ্ছে নাব্যতা সংকট।
ইতিমধ্যে এ রুটের নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি বেগম সুফিয়া কামালকে সরিয়ে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফেরি কুঞ্জলতা ও কদম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করলেও ধারণক্ষমতার চেয়ে কম যানবাহন নিয়ে পারাপার হতে বাধ্য হচ্ছে। এছাড়াও ১ থেকে ২ বারের বেশি যাতায়াত করতে পারছে না। নৌরুটের রমনাঘাট, ব্যাংকমাড়া, রাজারভিটা, পুটিমারী, ফকিরেরহাট টার্নিং থেকে রৌমারী ঘাট পর্যন্ত অনেক স্থানের কোথাও ডুবোচর, সরু চ্যানেল, কোথাও নাব্যতা কমে সংকট প্রকট হয়েছে। এ অবস্থায় ফেরিগুলো নদীর তলদেশ ঘেঁষে চলছে। তাতে ফেরিগুলোর প্রপেলারে ক্ষয় সৃষ্টি হচ্ছে এবং নাব্যতার কারণে ইতিমধ্যে ফেরি কুঞ্জলতার কিছুটা যান্ত্রিক ক্রটিও হয়েছে। নাব্যতা এড়াতে ভারী যানবাহন কম পার করায় পণ্যবাহী ট্রাকগুলো আটকা পড়ছে।
ফেরি কুঞ্জলতার মাস্টার অফিসার মোঃ রেজাউল করিম জানান, নৌরুটটির অনেক স্থানে চ্যানেল সরু হয়ে গেছে। সে কারণে দুটি ফেরি পাশাপাশি চলতে পারে না। আবার অনেক স্থানে পানি কমে যাওয়ায় তলদেশ ঘেঁষে চলতে গিয়ে ফেরির প্রপেলার ক্ষয়ে যাচ্ছে। এছাড়ও বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
ফেরি কদম এর মাস্টার ইনচার্জ বলেন, নদীর অনেক জায়গায় ৪/৫ ফুটের মতো পানি রয়েছে আবার এর চেয়েও কম রয়েছে এবং অনেক স্থানে পানির রিডিংও বোঝা যায়না। এর মধ্য দিয়ে ভারী যানবাহন চলতে সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে ড্রেজিং বড় আকারে শুরু করা দরকার।
বিআইডব্লিউটিসির চিলমারী ঘাটের ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান বলেন, নাব্যতা সংকটের কারণে হালকা ও কম যানবাহন নিয়ে ফেরি ছাড়তে হচ্ছে ফলে রাজস্ব আয়ও কমে যাচ্ছে। ড্রেজিং ছাড়া এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। বিআইডাব্লিউটিসির আর এক কর্মকর্তা বলেন, ‘নাব্যতা সংকটের বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
বিআইডাব্লিউটিএ প্রকৌশলী বলেন, যেখাসে যেখানে সমস্যা হচ্ছে সেই এলাকাগুলোতে ডেজিং করা হচ্ছে।
//নিউজ/চিলমারী//সোহেল/ডিসেম্বর/২৬/২৩