।। উপজেলা প্রতিনিধি ।।
একাধিক পুষ্টিগুণে ভরপুর শজনেগাছের বিভিন্ন অংশ যেমন পাতা, ফল, বাকল, ফুল ও বীজ বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করে থাকেন অনেকেই। তবে বর্তমানে ডায়াবেটিসের ঘরোয়া ওষুধ হিসেবে বিশেষ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে শজনেগাছের বহুল ব্যবহৃত অংশ শজনেপাতা । শাক, ডাল, কাঁচায় বা রস করে, পাতার গুঁড়া চায়ের সাথে মিশিয়ে, সস, স্যুপ, সালাদ ইত্যাদি হিসেবে এই কার্যকরী শজনেপাতা গ্রহণ করা হয়। ডায়াবেটিসে শজনেপাতার ভূমিকা অনেক এই মর্মে রোগীরা খালি পেটে বা খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর শজনেপাতা গ্রহণ করে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা করে এবং যাঁরা ইনসুলিন ব্যবহার করেন, তাঁদের ইনসুলিনের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিঃসরণ ক্ষমতা বাড়াতেও এসব রোগী শজনেপাতা গ্রহণ করে থাকে।
কিন্তু ডায়াবেটিসে শজনেপাতার ভূমিকা কতটা যৌক্তিক সে সম্পর্কে একাধিক গবেষণায় জানা যায়, যেসব উপায়ে শজনেপাতা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে, সে সম্পর্কে আশানুরূপ কোনো ফল পাওয়া যায়নি ও পর্যাপ্ত গবেষণার স্বল্পতা রয়েছে। প্রতিদিন ৭ গ্রাম বা আধা চামচ শজনেপাতা গ্রহণের ফলে ভিটামিন বা খনিজ লবণজনিত বিষক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এছাড়া শজনেপাতার অতিব্যবহারে লিভার ও কিডনির ক্ষতি হতে পারে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অ্যালার্জির সমস্যা এত তীব্র আকার ধারণ করে যে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কাও অধিকাংশ বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিসে শজনেপাতা গ্রহণে সতর্কতা:
➤ শজনেপাতা ও ওষুধ একসাথে গ্রহণ করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি শজনেপাতা গ্রহণ করাটা উচিত নয়।
➤ ডায়াবেটিসে যেসকল রোগী আবার ওষুধের পরিবর্তে শুধু শজনেপাতা গ্রহণ করে তাদের এ অনিয়ন্ত্রিত অভ্যাসের ফলে ডায়াবেটিসজনিত অনেক জটিলতার মুখে পড়তে হয়।
➤ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীরা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে শজনেপাতা গ্রহণের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে তাদের পরামর্শ অনুযায়ী শজনেপাতা গ্রহণ করতে হবে।
তবে অনেক ক্ষেত্রে থাইরয়েড হরমোনের অভাব, লিভারের সমস্যা , গর্ভাবস্থায় ও রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যাওয়া ব্যক্তিদের শজনেপাতা গ্রহণ করা একেবারেই উচিত নয়।