।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
রক্তের মধ্যে গ্লুকোজ বা শর্করার মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে নিচে নেমে যাওয়াকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলে। হাইপোগ্লাইসেমিয়া সাধারণত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ইনসুলিন-নির্ভরশীল রোগীদের কাছে একটি প্রচলিত শব্দ, যা তাদের যেকোনো সময়েই হতে পারে। দীর্ঘক্ষণ ধরে কঠোর ব্যায়াম, অতিরিক্ত মদ্যপান, অনিয়মিত খাদ্যাভাস, ইনসুলিন গ্রহণের মাত্রায় অনিয়ম বা ওষুধের মাত্রা বেশি এবং খাবার ও ওষুধের মধ্যে সমন্বয় না থাকা ইত্যাদির ফলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা ঘন ঘন কম বা বেশি হলে দেহ ও মনের ওপর অধিক চাপ সৃষ্টি হয়। ফলে দেহের নানাবিধ জটিলতার পাশাপাশি হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কবলে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে শুরু করে এমনকি ডেকে আনতে পারে মৃত্যুও।
গবেষণায় জানা গেছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগী জীবনে এক বা একাধিকবার এ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন এবং কেউ হাইপোগ্লাইসেমিয়ায় আক্রান্ত হলে তার কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। যেমন– মাথাব্যথা, বিভ্রান্তি, বুক ধড়ফড় করা, বেশি ক্ষুধা লাগা, বমি বমি ভাব, ঘাম ও টেনশন হওয়া, অস্থিরতা, কাউকে চিনতে না পারা, জ্ঞান হারিয়ে ফেলা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসা
হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসায় যতদ্রুত সম্ভব এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। যদি হাইপোগ্লাইমিয়ার প্রতিক্রিয়া কম হয় তাহলে তৎক্ষণাৎ রোগীকে চিনিযুক্ত তরল খাবার যেমন- ফলের রস, দুধ, শরবত ইত্যাদি দিতে হবে। যদি হাইপো হওয়ার মতো কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয় তাহলে রোগীকে বরাদ্দকৃত খাবারটি খাওয়াতে হবে। কোনো কারণবসত রোগী জ্ঞান হারালে বা কোনোভাবে খাবার খাওয়ানো সম্ভব না হলে, তবে ইনজেকশনের মাধ্যমে রোগীর চিকিৎসা করাতে হবে। এজন্য ২ অ্যাম্পুল ২৫% গ্লুকোজ ইনজেকশন দিতে হবে বা যতদ্রুত সম্ভব হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যেতে হবে।
প্রতিকারঃ-
★ দৈনিক পাঁচ থেকে ছয়বার ৩ ঘণ্টা পর পর খাবার খেতে হবে।
★ ওষুধ অথবা ইনসুলিনের সমন্বয় রেখে খাবার গ্রহণ করতে হবে।
★ সময়মতো ইনসুলিন দিতে হবে এবং ইনসুলিন দেয়ার পর বাড়ির বাইরে কোথাও যাওয়া যাবে না।
★ জটিল শর্করা জাতীয় খাবার যেমন- লাল মোটা চাল, ভুসিযুক্ত আটার রুটি, তন্দুর রুটি, ভুট্টা, খেজুর ইত্যাদি খাদ্য তালিকায় রেখে খাওয়া প্রয়োজন।
★ দীর্ঘ সময়ের ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
★ সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে খাবার গ্রহণ করার পরেও যদি হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়, তবে পথ্যবিদের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক পরামর্শ নিয়ে খাদ্য তালিকা ঠিক করতে হবে।