।। লাইফস্টাইল ডেস্ক ।।
শীতের শুষ্ক ও দমকা বাতাস সাথে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে শিশুদের সর্দি-জ্বর প্রায় সময়ই হতে দেখা যায়। শিশুদের এই সর্দি-জ্বর হওয়া অতি সাধারণ সমস্যা মনে হলেও কখনো কখনো দীর্ঘ সময় ধরে ঠান্ডা ও কাশি থাকার ফলে নাকের পেছনে মাংস বেড়ে গিয়ে অ্যাডিনয়েড গ্রন্থির সমস্যা হতে দেখা যায়। নাকের পেছনে ও তালুর উপরে থাকা অ্যাডিনয়েড গ্রন্থিতে হওয়া সমস্যাটি দেখতে টনসিলের মতোই। ঊর্ধ্ব শ্বাসনালির ঘন ঘন সংক্রমণ, অ্যালার্জি ও বিশেষ করে অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণে অ্যাডিনয়েড গ্রন্থি বড় হতে থাকে।
শিশুর অ্যাডিনয়েড গ্রন্থির এ ধরণের সমস্যা দেখার জন্য বিশেষ কোন অ্যান্ডোস্কোপ অথবা ন্যাসোফেরিংস এক্সরের মাধ্যমে দেখে শিশুর অ্যাডিনয়েড গ্রন্থি বড় হয়েছে কিনা তা জানা যায় এবং পরিমিত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়ে থাকে।
শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ফারহানা ফারুক তন্দ্রা বলেন, শীতের সময় দেখা যায় যে শিশুরা পোশাক ঠিকমতো পড়তে চায় না, ফলে তাদের কান হয়তো বাইরে থাকে এবং তারা ঠান্ডা পানি খায়, যেকারণে বেশিরভাগ সময়ই তারা রোগাক্রান্ত হয়ে পরে। শিশুরা শীতের সময় ঠান্ডা পানি ও ঠান্ডা বাতাসের সাথে নিজেকে খাপ-খাওয়াতে পারে না। ফলে শিশুদের টনসিল হয়। শীতের সময় বাতাসে অনেক জীবাণু বেশি থাকে। বিশেষ করে ভাইরাস বেশি থাকে যা শ্বাস নালীর মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে ইনফ্লুয়েঞ্জা ও মামসের মতো বড় রোগের সৃষ্টি করতে পারে।
চলুন জেনে নেওয়া যাক শিশুর অ্যাডিনয়েড গ্রন্থির সমস্যার লক্ষণগুলোঃ-
★ শিশুরা ঘুমানোর সময় মুখ হা করে ঘুমিয়ে থাকে।
★ ঘুমানোর সময় নাক ডেকে বা শব্দ করে ঘুমানো এবং কখনো দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় ও ঘুম থেকে উঠে যায়।
★ সবসময় সর্দি-কাশি লেগে থাকে এবং সহজে তা প্রতিরোধ করা যায় না।
★ লসিকাগ্রন্থি বড় হয়ে নাকের মাংস বেড়ে যায়।
★ কানে কম শোনার সমস্যা, কান ঘন ঘন ব্যথা করা বা ইনফেকশন ও কানের পর্দা ফেটে যায়।
★ গলার মধ্যে ঘন ঘন ইনফেকশন হওয়া, খুসখুসে কাশি ও গলার স্বর পালটে যাওয়া।
করণীয় ★ অ্যাডিনয়েডের সমস্যায় যেসকল শিশু ভুগে থাকে, সাধারণত তাদের মধ্যে অনেকেরই অ্যাডিনয়েড গ্রন্থি ১২ থেকে ১৪ বছর বা তার চেয়েও বেশি দিন পর্যন্ত সমস্যাটি সম্পূর্ণভাবে ভালো হয় না।
★ অ্যাডিনয়েডের সমস্যায় কোনা রকম কিছু না করে শিশুকে অনাবশ্যক জটিল অবস্থার মধ্যে ফেলে রাখা কোনোমতেই ঠিক কাজ নয়।
★ শিশুদের উপরোক্ত কোনো লক্ষণ দেখা দিলে তার যথাযোগ্য চিকিৎসা না নিলে এসব উপসর্গে ভুগে থাকা শিশুদের অনেক ক্ষেত্রেই শরীরের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
★ এ সমস্যার জন্য চিকিৎসা না নিয়ে অনেকে ভুল ধারণার মধ্যে থাকে। যা কোনোভাবে করা উচিত নয়।
★ অ্যাডিনয়েড গ্রন্থির সমস্যায় প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল না থেকে যথা সম্ভব শিশুকে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশের আওতায় আনতে হবে। ★ অ্যাডিনয়েড গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়ার ফলে দীর্ঘ সময় অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হয়। যদি অ্যান্টিবায়োটিকে এ সমস্যা সম্পূর্ণ নিরাময় না হয়, তাহলে অপারেশনের মাধ্যমে এটি ফেলতে হবে। এই অপারেশনে তেমন কোনো জটিলতা থাকে না।