।। নিউজ ডেস্ক ।।
আজ শুক্রবার (০১ ডিসেম্বর) বীরপ্রতীক তারামন বিবির পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৮ সালের এই দিনে রাজিবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া গামে নিজ বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। কাচারীপাড়া গ্রামের তালতলা কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাধিস্থ করা হয় বীরপ্রতীক এই নারীকে।
তারামন বিবির জন্ম ১৯৫৭ সালে চর রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের শংকর মাধবপুর গ্রামে। পিতা প্রয়াত আব্দুস সোবহানের সাত ছেলেমেয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ১৯৭১ সালে তারামন বিবি ১১নং সেক্টরে নিজ গ্রামে ছিলেন। সে সময় ১১নং সেক্টরের অধীনে ছিলেন সেক্টর কমান্ডার আবু তাহের। তারামন বিবির গ্রামের পাশের একটি ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা এক মুক্তিযোদ্ধা মুহিব হাবিলদার বীরপ্রতীক তারামন বিবিকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার জন্য উৎসাহিত করেন। মুহিব হাবিলদার মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে রান্নাবান্নার কাজের জন্য তারামন বিবিকে নিয়ে আসেন। তখন তারামন বিবির বয়স ছিল মাত্র ১৩ কি ১৪ বছর। পরবর্তীতে তাঁর সাহস ও শক্তির পরিচয় পেয়ে মুহিব হাবিলদার তাকে অস্ত্র চালানো শেখান। এরপর একদিন দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় তারামন ও তার সহযোদ্ধারা জানতে পারেন পাকবাহিনীর একটি গানবোট তাদের দিকে আসছে। তারপর রান্নার খুন্তি ফেলে রাইফেল হাতে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সম্মুখ সমরে অংশ নেন তারামন বিবি এবং শত্রুদের পরাস্ত করতে সক্ষম হন তাঁরা।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া তারামন বিবিকে তার সাহসীকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘বীর প্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু বীরপ্রতীক খেতাব দেওয়া হলেও সে কথা তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর পর্যন্ত জানতে পারেননি। পরে ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহের আনন্দমোহন কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক বিমল কান্তি দে রাজিবপুর কলেজের অধ্যাপক আবদুস সবুর ফারুকীর সহায়তায় প্রথম বীর প্রতীক তারামন বিবির সন্ধান সন্ধান পান।