।। নিউজ ডেস্ক ।।
আজ বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) নিভৃতচারী লেখক হায়দার বসুনিয়ার ৮৪ তম জন্মদিন। এই নিভৃতচারী লেখক ১৯৩৯ সালের ৩০ নভেম্বর রাজারহাটের নাজিমখাঁন ইউনিয়নের মনারকুঠি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নিভৃতপল্লীতে থেকেও যে সাহিত্য চর্চা করা যায় তার অন্যান্য উদাহরণ নিভৃতচারী লেখক হায়দার বসুনিয়া। সরকারি চাকরির নানা সুযোগ আসলেও তিনি পেশা হিসেবে বেঁচে নেন গ্রামের মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকতাকে। শিক্ষকতা পেশার পাশাপাশি রাত জেগে অমর সৃষ্টি করেছেন এই নিভৃতচারী লেখক। একপর্যায়ে ২০০৩ সালে শিক্ষকতা পেশা থেকে অবসরে গেলেও থেমে যায়নি তাঁর লেখালেখি। তিনি এখনও লিখেই যাচ্ছেন অবিরাম।
হায়দার বসুনিয়া নাজিমখাঁন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক, কুড়িগ্রাম রিভার ভিউ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ভর্তি হন গাইবান্ধা কলেজে। পরে একই কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন নিভৃতচারী এই লেখক। তিনি এক্সসাইজ ইন্সপেক্টর, ডিআইটি পদে কর্মজীবন শুরু করলেও মা ও মাটির টানে ফিরে আসেন নিজ গ্রামে। সৎ জীবনযাপনের লক্ষ্যে যোগদেন নাজিমখাঁন জুনিয়র হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক হিসেবে। কিছুদিন শিক্ষকতার পর ময়মনসিংহ টি.টি কলেজ থেকে বিএড কোর্স শেষ করেন। আবারও নানা সরকারি চাকরির সুযোগ আসলেও তিনি সেদিকে না ফিরে উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে (উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুল এন্ড কলেজ) সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ, এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট হতে এমএড কোর্স সম্পন্ন করেন লেখক বসুনিয়া। পরে উলিপুর মহারাণী স্বর্ণময়ী স্কুলে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা শেষে সেখান থেকে অবসর গ্রহণ করেন নিভৃতচারী লেখক হায়দার বসুনিয়া।
তিনি এ পর্যন্ত ৫০ টিরও বেশি উপন্যাস লিখেছেন যার অর্ধেকই প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর লেখায় পাওয়া যায় সাধারণ মানুষের দৈন্দিন ছুটে চলার গল্প, সমাজের গল্প, সামাজিকতার গল্প, আশা ও নিরাশার গল্প, ভালোবাসা ও হতাশার গল্প, মুক্তিযুদ্ধ ও মানবিকতার গল্প। শুধু উপন্যাস লেখায় সীমাবদ্ধ ছিলেন না এই লেখক। গল্প, কবিতা, নাটকসহ সাহিত্যের সকল শাখায় লিখেছেন তিনি। জয় করে নিয়েছে পাঠকের মন। নন্দিত হয়ে ওঠেছেন হায়দার বসুনিয়া।
তার প্রকাশিত উপন্যাস হলো নেপথ্যে লীলাময়, মেথর সমাচার, রাজাকারের মের্জাই বদল, দিগ্বিজয়ীর কান্না, হাতবদল, জালে ফেঁসেছিলো, পরী ডানাকাটা, সেতু, চলো যাই তেপান্তরের মাঠে, দুটো পোড়ো বাড়ির ইতিকথা, তুলো মনি, ভাগ্যান্বেষী ভবঘুরে, তিস্তা নদীর পাড়ে ও আপন মনের আরশি। তাঁর লেখা কাব্যগ্রন্থ জেগে আছি, অমোঘ সায়াহ্ন, হংস সংলাপ ও রঙিন চশমা এবং ধর্মীয় প্রবন্ধের বই সিরাজম মুনিরা ও তাঁর উন্মতগণ।